আমের ২৬টি উপকারিতা ও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জেনে নিন

আমের ২৬টি উপকারিতা ও গুণাগুণ জেনে নিই

মৌসুমী ফলের তালিকা করতে চাইলে অনেকেরই প্রথম পছন্দ হিসেবে পাওয়া যায় আম। সুস্বাদু এই ফলটির ভক্ত আমরা সবাই। বেশ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষের পুরো বছরই কাটে আমের অপেক্ষায় সে কাঁচা হোক কিংবা পাকা। কিন্তু এই রসালো ফলটি আমাদের শরীরের জন্যও যে অত্যাধিক উপকারী সেটা ক’জনই বা জানেন? তাই আমের উপকারিতা সম্পর্কে বিষদ বর্ণনা জেনে নিন এখান থেকে।

এই আর্টিকেল পড়ে যা যা জানতে পারবেনঃ

 আম
 আমের প্রকারভেদ
 আমের পুষ্টিগুণ 

আমের উপকারিতা
কাঁচা আম নাকি পাকা আম কোনটি বেশি উপকারী?
 আম কীভাবে খাবেন?
আম প্রক্রিয়াজাতকরণের উপায়

আম

বৈশাখ এবং জ্যৈষ্ঠ এই দুটো মাস যেনো বাংলাদেশের রসের মাস। বাংলা সাহিত্যে “মধুমাস” উপাধি তো এরা আগেই পেয়েছে৷ হরেক রকমের ফল, তার হরেক রকমের স্বাদ! কিন্তু পছন্দের প্রাধান্যে আম যে সবার থেকে এগিয়ে তা বলা বাহুল্য। 

মাঘের শেষে হালকা শীতের আমেজে আমের মুকুল ধরতে শুরু করলেই যেনো উৎফুল্লতা শুরু হয়। তারপর বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে পর পর পাকতে থাকে একের পর এক প্রকার।

সবুজ রঙের কাঁচা আমে দাঁত টকে না গেলে বসন্তের শেষটা যেনো ঠিক জমে না। 

আর তারপরেই হলুদ রঙের পাকা আমের গন্ধে ভরে ওঠে চারিদিক। “বছরের প্রথম পাকা আম” বলে হাসতে হাসতে সবাই বরণ করে নেয় এই অমৃত ফলটিকে।

আমের প্রকারভেদ

প্রাচীনকাল থেকেই হরেক রকমের আমের নাম শুনে এসেছি আমরা। রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, দিনাজপুর, প্রভৃতি অঞ্চলের বিখ্যাত আমগুলো পুরো দেশেই যেনো উৎসবের আমেজ নিয়ে আসে।

আমের চাহিদা অনেক পুরোনো। বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন জাতের আম উৎপাদন নিয়ে গবেষণা করছে প্রতিনিয়ত। 

আমের বিখ্যাত কয়েকটি প্রকারভেদ নিচে দেওয়া হলো-

১. হিমসাগর বা খিরসাপাতি আম

হিমসাগর আম

৩.হাড়িভাঙ্গা আম

হাড়িভাঙ্গা আম

৫. আম্রপালি আম

আম্রপালি আম

৭. ফজলি আম

ফজলি আম

২. মল্লিকা আম

মল্লিকা আম

৪. ব্যানানা ম্যাংগো বা মাহালিশা আম

ব্যানানা ম্যাংগো বা মাহালিশা আম

৬. ল্যাংড়া আম

ল্যাংড়া আম

৮. গোপালভোগ আম

গোপালভোগ আম

আমের পুষ্টিগুণ

মৌসুমি ফলগুলো সবসময়ই আমাদের জন্য অনেক পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ হয়ে থাকে। আম তার মধ্যে অনন্য। আম প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল বা খনিজ লবণ, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, প্রভৃতি খাদ্য উপাদান ধারণ করে থাকে।

১০০ গ্রাম কাঁচা আম থেকে প্রায় ৪৪ ক্যালরি এবং পাকা আম থেকে প্রায় ৮২ ক্যালরি পাওয়া যায়।

নিচের ছক থেকে জেনে নিন একটি মাঝারি সাইজের অর্থাৎ ১০০ গ্রাম আমে কোন উপাদান কী পরিমাণে আছে –

উপাদানপুষ্টির পরিমাণ
কার্বোহাইড্রেট ১৫ গ্রাম
ফাইবার১.৬ গ্রাম 
গ্লুকোজ১৪ গ্রাম
প্রোটিন০.৮ গ্রাম
ফ্যাট০.৪ গ্রাম
সম্পৃক্ত চর্বি০.১ গ্রাম
কোলেস্টেরল ০ মিলিগ্রাম
পটাশিয়াম১৬৮ মিলিগ্রাম
ক্যালসিয়াম ১৩ মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম১৫ মিলিগ্রাম 
সোডিয়াম১ মিলিগ্রাম
ক্যারোটিন২৭৪০ মাইক্রোগ্রাম
আয়রন১.৩ গ্রাম
ক্যালসিয়াম(পাকা আম)১৪ মিলিগ্রাম
ক্যালসিয়াম (কাঁচা আম)১০ মিলিগ্রাম
ফসফরাস১৬ মিলিগ্রাম
ভিটামিন ২৫ মাইক্রোগ্রাম
ভিটামিন সি১০৩ মিলিগ্রাম 
রিবোফ্লাভিন ০.৯ মিলিগ্রাম
থায়ামিন০.৮ মিলিগ্রাম
আয়রন (কাঁচা আম)৫.৪ মিলিগ্রাম
আয়রন(পাকা আম)১.৩ মিলিগ্রাম 
পানি৭৮.৪ গ্রাম
বিটা ক্যারোটিনয়েড ৩০০ মাইক্রোগ্রাম 
ফোলেট ৭১ মাইক্রোগ্রাম 

আরডিআই (RDI- Reference Daily Intake) বলতে বোঝায় আপনার শরীরে প্রতিদিন কী পরিমাণে পুষ্টির প্রয়োজন পড়ে। অর্থাৎ আপনার প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে কোন পুষ্টি উপাদানটি কী পরিমাণে থাকবে সেই হিসেব।

একটি ১০০ গ্রাম আমের মাধ্যমে আপনার আরডিআই এর কত শতাংশ পূরণ হচ্ছে তা নিচের ছকে উল্লেখিত আছে- 

উপাদানযে পরিমাণ শতকরা আরডিআই(RDI) আছে
কপার২০%
ফোলেট১৮%
ভিটামিন এ১০%
ভিটামিন ই৯.৭%
রিবোফ্লাভিন ৫%
ভিটামিন বি-৫৬.৫%
ভিটামিন বি-৬১১.৬%
ভিটামিন কে৬%
ভিটামিন সি৬৭%
নায়াসিন৭%
পটাশিয়াম৬%
ম্যাঙ্গানিজ৪.৫%
থায়ামিন৪%
ম্যাগনেসিয়াম৪%

আরও পড়ুনঃ নাশপাতির ২৪টি স্বাস্থ্য উপকারিতা ও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জেনে নিন

আমের উপকারিতা 

আমের উপকারিতা বলে শেষ করা মুশকিল হয়ে যাবে। তারপরেও এর কিছু কার্যকারিতা সম্পর্কে ধারণা দেয়া হল-

১.ক্যান্সার প্রতিরোধ করে-

আমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যেমন কুয়েরসেটিন, আইসোকুয়ারসেটিন, ফিসেটিন, এস্ট্রাগ্যালিন, গ্যালিক এসিড, মিথাইল গ্যালেট ইত্যাদি। 

এসকল অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান প্রোস্টেট ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার, লিউকেমিয়া, ব্রেস্ট ক্যান্সার, প্রভৃতি ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে৷ 

আমে ম্যাঙ্গিফেরিন নামক একটি যৌগ আছে যাকে “সুপার অ্যান্টি অক্সিডেন্ট” বলা হয়। এটি আমের পুষ্টিগুণের একটি অন্যতম প্রধান বিশেষত্ব। এই অ্যান্টি অক্সিডেন্টটি ক্যান্সার কোষের গড়ে ওঠার পথে প্রধান অন্তরায়৷ 

২.হজমে সহায়ক

আমে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। ফাইবার হজমের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি উপাদান। এছাড়াও আমে যে এনজাইম থাকে তা প্রোটিন জাতীয় খাদ্যকে ভাঙতে সহায়তা করে। ফলে তা স্বাভাবিক ভাবে পরিপাককৃত এবং শোষিত হয়।

অ্যামাইলেজ এনজাইম কার্বোহাইড্রেটকে বিভিন্ন সুগার যেমন গ্লুকোজ, ম্যাল্টোজ, প্রভৃতি ক্ষুদ্র যৌগে রূপান্তরিত হতে সহায়তা করে। পাকা আমে এই অ্যামাইলেজ এনজাইম এর কার্যকারিতা বেশি থাকে। ফলে হজমে সহায়তা করতে পারে।

এছাড়াও কাঁচা আমে প্রচুর পরিমাণে গ্যালিক এসিড থাকে। এটি আপনার হজম প্রক্রিয়াকে গতিশীল করবে।

৩.গ্যাস্ট্রিক থেকে রক্ষা করে 

আমের “ম্যাঙ্গিফেরিন” উপাদান সুপার অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হিসেবে পরিচিত। কেননা এই উপাদানটি বিভিন্নমুখী সমস্যা সমাধানের একটি প্রধান উপায়।

এটি পাকস্থলীতে অম্লীয় পরিবেশ তৈরি হতে বাধা দেয়। অর্থাৎ গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটি থেকে রক্ষা করে। 

৪. রক্তচাপ ঠিক রাখে

আমে উচ্চ পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়াম উপস্থিত। এই দুটি মিনারেল বা খনিজ লবণ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে এবং পালস রেট ঠিক রাখে।

তাই যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে, তাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য এটি একটি উপকারী মাধ্যম হতে পারে।

৫. হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে

আমে বিভিন্ন ধরণের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এর আধিক্য রয়েছে।

এতে রয়েছে পলিফেনল যা হৃৎপিণ্ডের ক্ষতি সাধনকারী বর্জ্য পদার্থ দূর করে এবং স্ট্রোকসহ অন্যান্য হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।

হার্টের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।

৬. ফ্রি রেডিক্যাল দূর করে

আমে উপস্থিত ম্যাংগিফেরিন, ক্যাটেচিন, র‍্যামনেটিন, অ্যান্থোসায়ানিন, বেনজোয়িক এসিড, ক্যাম্পফেরোল, প্রভৃতি অ্যান্টি এক্সিডেন্ট দেহের ফ্রি রেডিক্যালগুলো থেকে দেহকোষকে বাঁচাতে সাহায্য করে। 

ফ্রি রেডিক্যাল বলতে মূলত বোঝায় যারা দেহকোষের সাথে যুক্ত হয়ে কোষগুলোকে ধ্বংস করে দেয়।

আমের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এসকল ফ্রি রেডিক্যাল দূর করে এবং দেহের ভেতরে কোনো গুরুতর রোগকে বাসা বাঁধতে দেয় না।

৭. শরীরের বিষাক্ত পদার্থ দূর করে

অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এর পাশাপাশি আমে উপস্থিত রয়েছে “লাইকোপেট” নামক একটি অত্যন্ত উপকারী যৌগ যা শরীরের অভ্যন্তর থেকে বিষাক্ত পদার্থসমূহ দূর করে। ফলে শরীর সুস্থ থাকে।

৮.পানিশূণ্যতা হ্রাস করে

সব ফলের মতই আমে একটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পানি আছে। আমে প্রায় ৭৮.৪ গ্রাম পানি রয়েছে। আমাদের দেহের ভারসাম্য রক্ষা করতে পানির কোনো বিকল্প নেই।

আমে উপস্থিত উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পানি দেহের এই ভারসাম্য রক্ষায় সহায়তা করে এবং দেহের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কার্যাবলী সম্পাদনে ভূমিকা রাখে। 

৯. অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ করে

আমে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে। আমরা জানি আয়রন হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে সহায়তা করে।

আম খাওয়ার ফলে আমে উপস্থিত আয়রন দেহের ভেতরে লোহিত রক্তকণিকা এবং হিমোগ্লোবিন উৎপাদনের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। যার ফলে রক্তস্বল্পতা রোধ হয়।

এছাড়াও আমে উপস্থিত ফোলেট রক্তকণিকা উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

১০. ত্বকের সমস্যা প্রতিহত করে

একটি স্বাস্থ্যকর, মসৃণ এবং লাবণ্যময় ত্বক কে না চায় বলুন? আম এক্ষেত্রে হতে পারে আপনার নির্ভরযোগ্য উৎস।

আম ত্বকের খসখসে ভাব দূর করতে সহায়তা করে। আমের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বকের মৃত কোষগুলোকে ত্বকের ক্ষতি করতে দেয় না। 

বিভিন্ন রকম ধূলাবালি দূষণের কারণে আমাদের ত্বকে যে ময়লা জমে সেগুলো পরিষ্কার করতে সাহায্য করে আম। ত্বকের ছিদ্র বা পোরগুলোকে সঠিক উপায়ে রক্ষা করে এবং সেখান থেকে সব ধরণের ময়লা বের করে দিয়ে ত্বক পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। ফলে ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষিত হয়। 

১১. চুলের সমস্যা বিদায় এবার

আমে উপস্থিত ভিটামিন এ চুলের সমস্যাকে কার্যকরীভাবে দূর করে।

“সেবাম” নামক তরল মাথার ত্বককে মসৃণ করে এবং চুলকে স্বাস্থ্যকর রাখতে সাহায্য করে। ভিটামিন এ সেবাম উৎপন্ন করতে এবং চুলের বর্ধনে সহায়তা করে। 

ভিটামিন সি চুলের গোড়াকে শক্ত করতে সহায়তা করে। এর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে চুলকে রক্ষা করে এবং চুলের বর্ধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

১২. দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে

আম দৃষ্টিশক্তির বর্ধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ আছে। ভিটামিন এ চোখের বিভিন্ন রোগ যেমন রাতকানা, অন্ধত্ব, ইত্যাদি রোগ প্রতিরোধ করে।

⇒ চোখের রেটিনার উন্নতি সাধনে ভূমিকা পালন করে। লুটেইন এবং জিয়াজ্যান্থিন নামে দুটি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এই কাজটি করে থাকে। 

⇒ রেটিনা আলোকে মস্তিষ্কের সিগন্যালে রূপান্তরিত হতে সাহায্য করে। এই দুটি এনজাইম রেটিনায় আসা অতিরিক্ত ক্ষতিকর আলোকরশ্মিকে শোষণ করে এবং রেটিনার ক্ষতি করতে দেয় না। 

⇒ এভাবে এরা চোখকে অতিবেগুনী রশ্মি থেকে রক্ষা করে৷ 

সেজন্যই ছোটবেলা থেকেই বাচ্চাদের আম খাওয়ার প্রতি জোর দেওয়া হয়। 

১৩. ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে উপকারী

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আম দারুণ উপকারী একটি ফল।

পুষ্টিমাত্রার ছক থেকে আপনি ইতিমধ্যে জেনে গেছেন যে এতে অতি মাত্রায় ফাইবার থাকে। এই ফাইবার রক্তের সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।

ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রিত হয়। এছাড়াও আম শরীরে ইনসুলিন নিঃসরণের পরিমাণ বৃদ্ধি করে।

তবে ডায়াবেটিস রোগীদের আম খাওয়ার ক্ষেত্রে নিয়ম মেনে চলতে হবে।  

⇒ আমের গ্লাইসেমিক মাত্রা ৫৬-৬০ এর ভেতরে এবং গ্লাইসেমিক লোড ১৮-১৯। গ্লাইসেমিক মাত্রা বলতে এমন একটি সংখ্যাকে বোঝায় যা শর্করা কত দ্রুত গ্লুকোজে পরিণত হতে পারে সে ধারণা দেয়।

⇒ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়া মানে রক্তের গ্লুকোজের উপর খাবারের প্রভাব কম। এই সংখ্যা ৫৫ বা তার কম হলে সেই খাবারটি ডায়াবেটিস রোগীর জন্য উপযোগী।

⇒ তাছাড়াও আমে শর্করার পরিমাণ বেশি। তাই সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে থাকলে আম খাওয়া ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। কিন্তু সেই সময়ে একটি আম খাওয়ার জন্য তাকে সমপরিমাণ কার্বোহাইড্রেট খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। 

⇒ দুপুরে এবং রাতে আম পরিহার করাই শ্রেয়। কেননা সকালে আম খেলে সারাদিনের কর্মব্যস্ততায় আমের ক্যালরিটুকু খরচ হয়ে যায় ফলে শরীরে প্রভাব পড়তে পারে না।

⇒ শর্করার পরিমাণ বেশি এবং গ্লাইসেমিক ইনডেক্স মাঝারি পর্যায়ে হওয়ায় অতিরিক্ত পরিমাণে আম খাওয়া ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নির্ধারিত পরিমাণে আম খেতে হবে।

১৪. ক্ষতিকারক কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়

আমে উপস্থিত ফাইবার এবং কোলেস্টেরল হ্রাসকারী উপাদানগুলো দেহের জন্য ক্ষতিকারক কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে৷ 

এছাড়াও আমে রয়েছে পেকটিন। পেকটিন দেহের জন্য ক্ষতিকর এইচডিএল (উচ্চ ঘনত্বের লিপোপ্রোটিন) কমাতে সাহায্য করে।

১৫. দেহে শক্তির যোগান দেয়

কাঁচা আমের তুলনায় পাকা আমের ক্যালরি মূল্য বেশি। এটি দেহের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

আমে কার্বোহাইড্রেট এর পরিমাম বেশি। তাই দেহ সচল রাখতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ শক্তির যোগান দেয় আম।

১৬. লিভারের জন্য উপকারী

লিভারের জন্য সবচেয়ে উপকারী হলো কাঁচা আম। মূলত কাঁচা আম বাইল বা পিত্তরসের উৎপাদন বৃদ্ধি করে এবং কার্যকারিতা ত্বরান্বিত করে।

এর ফলে যকৃত ভালো থাকে। পিত্তরস অগ্ন্যাশয়ে উৎপন্ন হয় এবং তা যকৃতে সংরক্ষিত থাকে। ফলে যকৃত বা লিভার ভালো থাকে।

১৭. বাইল এসিড নিঃসরণ বৃদ্ধি

আমে পরিমিত পরিমাণে টারটারিক এসিড, ম্যালিক এসিড এবং সাইট্রিক এসিড থাকে। বাইল বা পিত্তরস শরীরের পরিপাকতন্ত্রে ক্ষারীয় পরিবেশ তৈরি করে খাদ্য হজমে সহায়তা করে।

আমে উপস্থিত এই এসিডগুলো বাইলের কার্যকারিতা এবং নিঃসরণ বৃদ্ধি করে যা শরীরের ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রেও সহায়ক।

১৮. অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া পরিষ্কার করে 

আমাদের অন্ত্রে কিছু ব্যাকটেরিয়া বসবাস করে যা আমাদের জন্য উপকারী বলে স্বীকৃত। এই ব্যাকটেরিয়া খাবার হজম করার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে।

আমের মধ্যে উপস্থিত ফাইবার এই উপকারী ব্যাকটেরিয়াগুলোকে যথাযথ কাজের পরিবেশ তৈরি করে দেয়।

একইসাথে আমাদের দেহে যেসকল রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া আছে সেগুলোকে ধ্বংস করতেও প্রয়োজন আমের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট।

কাঁচা আমের পেকটিন গ্যাস্ট্রোইন্টেসটাইনাল অথবা অন্ত্রের রোগসমূহ থেকে মুক্তি প্রদান করে।

১৯. মাড়িক্ষয় রোধ করে 

মাড়িক্ষয়ের একটি অন্যতম কারণ হিসেবে দায়ী ভিটামিন সি।

আমরা পুষ্টি ছক থেকে প্রথমেই জেনেছি যে আমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে যা মাড়ি ক্ষয়, মাড়ি থেকে রক্ত পড়া, প্রভৃতি মাড়ি এবং দাঁতের সমস্যার সুরাহা করতে পারে। 

২০. ঘুমের সমস্যা দূর করে 

আমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল, ফাইবার, কার্বোহাইড্রেট, ইত্যাদি রয়েছে। এগুলো শরীরের ইনসুলিন লেভেল বাড়াতে সাহায্য করে।

এছাড়াও আমে রয়েছে ট্রিপ্টোফ্যান নামক অ্যামিনো এসিড যা ঘুমের জন্য দায়ী।

শরীরে ইনসুলিন লেভেল বাড়ার ফলে আমে উপস্থিত ট্রিপ্টোফ্যান নিঃসরণ আরও বেশি ত্বরান্বিত হয়। এটি সেরাটোনিন নামক মস্তিষ্কের একটি নিউরোট্রান্সমিটার সিনথেসিস করে যা ঘুমের জন্য দায়ী। ফলে আম খেলে ঘুমের সমস্যা দূর হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

২১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে

আমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

আমাদের দেহে শ্বেত রক্তকণিকা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলার প্রধান সৈনিক। ভিটামিন সি এই শ্বেতরক্তকণিকা গড়ে তুলতে সাহায্য করে।

ফ্লু, সর্দি-কাশি সহ সাধারণ যেসকল রোগ আমাদের ঘিরে আছে সেসকল থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব ভিটামিন সি,ভিটামিন এ এবং ক্যারোটিনয়েড সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণের মাধ্যমে।

ফলে আম দেহকে অনেক রোগ-ব্যাধী থেকে দূরে রাখে।

২২. হিট স্ট্রোক প্রতিরোধ করে

আম শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করে। গ্রীষ্মকালে মাঝে মাঝে তাপমাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে যায়। যারা অত্যাধিক তাপ সহিষ্ণু নয়, এমন অনেকেরই হিট স্ট্রোক হয়ে থাকে। 

আম শরীরের তাপমাত্রার ভারসাম্য রাখতে সহায়তা করে।

আমের ভেতরে পটাশিয়াম থাকার কারণে তা শরীর অতিরিক্ত গরম হতে দেয় না। ফলে শরীর ঠান্ডা থাকে এবং হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে যায়।

২৩. ওজন কমাতে সাহায্য করে

আমে বায়োঅ্যাক্টিভ যৌগ (বেটালিন, ক্যারোটিনয়েড, ফ্লাভোনয়েড, অ্যান্থোসায়ানিন) এবং ফাইটোক্যামিকালের উপস্থিতি এ কাজে সহযোগিতা করে।

এই উপাদানগুলো দেহের মেদ কোষ এবং মেদের সাথে সম্পর্কিত জিনগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। ফলস্বরূপ দেহের অতিরিক্ত মেদ কমে যায়।

এছাড়াও আমের ভেতরে উপস্থিত ফাইবার এবং ওজন হ্রাসকারী উপাদানসমূহ মেদের পাশাপাশি ওজন কমাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ফলে দেহের ওজন নিয়ন্ত্রিত থাকে। 

২৪. রক্তনালীর সুস্থতা বজায় রাখে

আমে প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন ধরণের খনিজ লবণ রয়েছে। এর মধ্যে পটাশিয়াম উল্লেখযোগ্য। পটাশিয়াম রক্তনালির সুস্থতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। 

২৫. স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে 

আমে উপস্থিত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে গ্লুটামিক এসিড। গ্লুটামিক এসিডের উপকারিতায় আম স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

একইসাথে যেকোনো কাজে মনোযোগ বজায় রাখার মত শরীরে উপযুক্ত উদ্দীপনা প্রদান করে।

২৬. বার্ধক্যের ছাপ রোধ করে

আমের পলিফেনল এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্টসমূহ সম্মিলিত ভাবে এ কাজে অবদান রাখে।

নিয়মিত আম খেলে তাই বার্ধক্যের ছাপ পড়ে না এবং বয়স বেড়ে যাওয়ার কারণে যে রোগগুলো হয় তার অনেকাংশ থেকেই মুক্তি প্রদান করে। 

ত্বকের কোলাজেন উপাদান তৈরি করতে সহায়তা করে ভিটামিন সি। যার ফলে আপনার ত্বকে ভাঁজ পড়তে পারে না এবং ত্বক মসৃণ ও টানটান থাকে। 

আরও বিভিন্ন আমের উপকারিতা জানুন নিচের ভিডিও থেকে।

কাঁচা আম নাকি পাকা আম কোনটি বেশি উপকারী? 

আম কাঁচা হোক কিংবা পাকা রসনার তৃপ্তিতে দুইই কিন্তু অনন্য। কাঁচা আমের টক স্বাদ কিংবা পাকা আমের মিষ্টি রস দুটোই আমাদের কাছে প্রিয়।

তবে আমের এই দুটি বৈশিষ্ট্য বিবেচনা করতে গেলে কাঁচা আমলেই হয়ত প্রথম প্রাধান্য দেয়া হবে। কিন্তু কেনো?

⇒ কাঁচা আম –

👉 শরীরকে ঠান্ডা রাখে।

👉 হজম প্রক্রিয়া গতিশীল করে। 

👉 চুল ও ত্বক সুস্থ রাখে।

👉 শর্করার পরিমাণ কম, ফলে ওজন বাড়ার ভয় থাকে না।

👉 ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী কারণ চিনি থাকে না।

👉 ক্লান্তি দূর করে।

👉 ঘামাচি প্রতিরোধ করে।

👉 সকালের বমি বমি ভাব দূর করে।

👉 রক্তের সমস্যা দূর করে।

👉 কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

👉 রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

👉 শরীরে লবণের অভাব দূর করে।

👉 ডায়াবেটিস প্রতিরোধী। 

⇒ পাকা আম –

👉 দৃষ্টিশক্তির জন্য অত্যন্ত সহায়ক।

👉 ছোট শিশুদের বিকাশের জন্য উপযোগী।

👉 দাঁত ও চুল ভালো রাখে।

👉 গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সমাধান করে।

👉 ক্যালরি বেশি থাকায় দ্রুত শক্তি অর্জন করতে সাহায্য করে।
 
👉 ব্রণের সমস্যা দূর করে।

👉 ত্বকের গোড়া থেকে পরিষ্কার করে।

👉 মুখের কালো দাগ দূর করে।

👉 হজমে সহায়ক।

👉 রক্তস্বল্পতা রোধ করে।

👉 ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারে।

👉 হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন স্বাভাবিক রাখে।

👉 রক্ত পরিষ্কার করে।

👉 শরীরে অ্যালকোহলের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।

তবে এখানে আরও কিছু কথা আছে। 

• কাঁচা আম অতিরিক্ত খেলে তা ডায়রিয়ার কারণ হতে পারে।
পাকা আমের ক্ষেত্রে এ ধরণের বিষয় তেমন পরিলক্ষিত হয় না। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ ঠিক নয়।


• কাঁচা আমের কষ মুখে লাগলে সেটা অত্যন্ত বাজে ইনফেকশন বা ঘা সৃষ্টি করতে পারে।

পাকা আমে অনেক সময় পাউডার জাতীয় কিছু উপাদান দেখা যায়। তবে সেগুলো তেমন ক্ষতিকারক নয়। 


• পাকা আমে শর্করার পরিমাণ বেশি। তাই আপনি যদি পর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রম না করেন তাহলে ওজন বেড়ে যাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।
কাঁচা আমে শর্করার পরিমাণ কম। তাই এটি ওজন বাড়ার কারণ নয়।


• পাকা আমে সুগারের পরিমাণ বেশি থাকে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি হানিকারক। তাদের চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নির্দিষ্ট মাত্রার পাকা আম গ্রহণ অথবা বর্জন করতে হবে।

• কাঁচা আম টক হওয়ায় এতে সুগার এর পরিমাণ খুবই কম। এতে ভিটামিন সি বেশি থাকায় ডায়াবেটিস রোগীদের শরীরের বিভিন্ন উপকার করে। শুধু ডায়াবেটিস রোগী নয়। বরং এটি সবার জন্যই উপকারী।

আম আসলে এমন একটি ফল যা স্বাদে এবং পুষ্টিগুণে অতুলনীয়। এজন্যই তাকে “ফলের রাজা” বলা হয়ে থাকে।

তাই সেটা যেভাবেই খাওয়া হোক তা দেহের জন্য উপকারী।

তবে শরীরের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে আপনাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে কোন আমটি আপনার জন্য বেশি উপকারী হবে এবং আপনার শরীরে কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া পড়বে কি না।

আম কীভাবে খাবেন?

বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আমের বিভিন্ন রেসিপি প্রচলিত। এক এক রকম স্বাদ এবং এক এক রকম রন্ধন প্রক্রিয়ায় গ্রীষ্মকালটা যেনো বেশ সরগরম হয়েই থাকে।

খোসা ছাড়ানো আম

আম সবচেয়ে বেশি পুষ্টিদায়ক হয় কোনো কিছুর সাথে না মিশিয়ে সরাসরি খোসা ছাড়িয়ে খেলে।

গ্রীষ্মকালে আম সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকায় পাকা আম এভাবে খেতেই সকলে বেশি পছন্দ করেন। এভাবে আম খেলে আমের সর্বোচ্চ পুষ্টিটাই পাবেন আপনি।

⇒ আমের টক

এটা সাধারণত কাঁচা আমের একটি রেসিপি। কাঁচা আম খোসা ছাড়িয়ে টুকরো টুকরো করে কেটে গরম পানিতে সিদ্ধ করা হয়।

এরপর এতে সরিষা, লবণ এবং চিনি দিয়ে চুলার আঁচে বেশ কিছুক্ষণ তাপ দিয়ে নিলেই তৈরি হবে সুস্বাদু আমের টক।

আমের জুস

আমের জুস কাঁচা এবং পাকা উভয় আমের ক্ষেত্রেই অনেক জনপ্রিয়। কাঁচা আমের জুস শরীর ঠান্ডা রাখতে অত্যন্ত উপকারী।

আম কুচি কুচি করে কেটে নিয়ে ব্লেন্ডারে নিতে হবে। এবার এতে আপনি যেমন ঝাল খেতে চান সে অনুযায়ী কাঁচামরিচ, লবণ, সরিষা এবং গোলমরিচ দিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিলে জুস রেডি।

তেমনিভাবে চিনি, বরফ এবং আমের স্লাইস মিশিয়ে পাকা আমের জুসও তৈরি করে ফেলতে পারেন।

তরকারীতে আম

কাঁচা আম অনেকেই তরকারী রান্নার সময় ব্যবহার করে থাকেন। বিশেষত ডাল রান্নার সময় কাঁচা আমটা যেনো স্বাদের পরিমাণ আরও একটু বাড়িয়ে দেয়। 

আম মাখানো

আম টুকরো টুকরো করে কেটে তাতে আপনি যেমন ঝাল খেতে চান সে অনুযায়ী কাঁচামরিচ, লবণ বা বিটলবণ এবং কাসুন্দি মিশিয়ে জিভে জল আনা রেসিপি তৈরি করতে পারেন আপনি।

আম প্রক্রিয়াজাতকরণের উপায়

গ্রীষ্মকালে আমাদের কাছে আম সহজলভ্য। কিন্তু বছরের বাকি সময়গুলোতে আমের জন্য মনটা হাহাকার করলেও তা পাওয়ার উপায় থাকে না। তাই সেই সময়টার জন্যই গ্রীষ্মকালেই আম প্রক্রিয়াজাতকরণ করে রেখে দিন।

কিন্তু কীভাবে করবেন? সে উপায় জেনে নিন তাহলে-

⇒ আমের আচার

আচার একটি মুখরোচক খাদ্য। আচার ছাড়া অনেকের প্রতিদিনের খাবারই যেনো অসম্পূর্ণ। কাঁচা আম সংরক্ষণের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হিসেবে আচারকে স্বীকার করে নেয়া চলে।

👉 কাঁচা আম আঁটি সহ টুকরো টুকরো করে কেটে নিন। এরপর তা লবণ এবং লাল গুঁড়ো মরিচ মিশিয়ে বেশ ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে নিন। 

👉 রোদে শুকোনোর পর সরিষার তেল, রসুন, প্রয়োজনীয় মশলা(জিরা গুঁড়া,সরিষা,কালিজিরা,মেথি,পাঁচফোড়ন ইত্যাদি) দিয়ে আচার বানিয়ে ফেলুন। 

👉 আচার আরও সুস্বাদু করার জন্য তেলে দেওয়ার পর আরও ২/৩ দিন রোদে শুকোতে দিতে পারেন।

⇒ রেফ্রিজারেটর 

পাকা আম সংরক্ষণের সবচেয়ে সহজ উপায় হলো রেফ্রিজারেটর। পাকা আম টুকরো করে কেটে বাটিতে রেখে ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে পারেন বছর ব্যাপী। 

⇒ আমের মোরব্বা

কাঁচা আম প্রথমে টুকরো টুকরো করে কেটে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এতে আমের কষ বেরিয়ে যাবে।

এরপর পানি থেকে তুলে আচারি মশলা,সরিষার তেল, গোটা রসুন ইত্যাদি দিয়ে চুলায় আঁচে দিন। আমের টুকরোগুলো নরম হয়ে আসলে চুলা থেকে নামিয়ে বেশ কিছুদিন ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে নিন।

⇒ ক্যানিং

ক্যানিং একটি আধুনিক সংরক্ষণ পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে আম কেটে একটি জীবাণুমুক্ত বায়ুরোধী পাত্রে রাখা হয়।

ক্যানিং এর মাধ্যমে বছরব্যাপী সংরক্ষণ সম্ভব নয়, তবে বেশ কিছুদিন রাখা যাবে।

শেষ কথা

মধুমাসের সব ফলের মধ্যে আমের কদর যেনো সবার কাছে একটু বেশিই রয়েছে। হরেক রকমের জাত আজকাল বাজারে প্রচলিত। গ্রীষ্মকালটা আমের স্বাদে সত্যিই দারুণ যায়। আর একইসাথে পুষ্টির বিচারে আম যথেষ্টই এগিয়ে। তাই গ্রীষ্মের নিদারুণ দাবদাহে আমের মধুর রসে নিজেকে শীতল করতে ভুলবেন না যেনো। 

References:

https://www.everydayhealth.com/diet-nutrition/diet/mangoes-nutrition-benefits-types-and-more/

https://www.webmd.com/diet/health-benefits-mango

https://www.healthline.com/nutrition/mango


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *