ডায়াবেটিস রোগীর খাবার তালিকা : ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কি কি খাবেন?

ডায়াবেটিস রোগীর খাবার তালিকা

বর্তমানে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। তাই এই ডায়াবেটিস অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিৎ। অনেক খাবার রয়েছে যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা পালন করে। তাই ডায়াবেটিস রোগীর খাবার তালিকা-তে এই সব খাবার রাখা উচিৎ।

ওষুধ ছাড়াই ডায়াবেটিস কমানোর উপায়

যারা ওষুধ ছাড়াই ডায়বেটিস কমাতে চান তাদের জন্য কিছু পরামর্শঃ

  • যারা ধূমপান করেন তাদের অবশ্যই ধূমপান ছাড়তে হবে। ক্ষতিকর জিনিসগুলোকে অবশ্যই বাদ দিতে হবে।
  • সয়াবিন তেল খাওয়া যাবে না। এর পরিবর্তে এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল খাওয়া যাবে।
  • রাত ১০-১১ টার দিকে ঘুমানো। 
  • রাত ৭-৮ টার পরে কিছু না খাওয়া। পানি ছাড়া কিছু খাওয়া যাবে না। ঘুমানোর ২ ঘণ্টা আগে ফুডফ্রি থাকা। এটি শরীরের জন্য খুব উপকারী। 
  • সব ধরনের ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস যেমন, মোবাইল,কম্পিউটার/ ল্যাপটপ, টিভি রাত ৭-৮ টার বন্ধ রাখতে হবে।
  • ভোরে পাঁচটার দিকে ঘুম থেকে ওঠা এবং কিছু সময় হাঁটাহাঁটি করা।
  • সকালের নাস্তা যতসম্ভব দেরিতে করা। নাস্তার সময় লেবুর পানি, গ্রিন টি, ডিম, মাখন, বাদাম  এবং শাক-সবজি খাবেন। 
  • প্রতিবার খাওয়ার আগে অ্যাপল সিডর ভিনেগার একা চামচ এক গ্লাস পানিতে দিয়ে খাবেন। শাক-সবজি ৭০ বার মুখের ভেতর চিবিয়ে খাবেন।

দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায়

  • ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। 
  • শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে। 
  • খাদ্যাভাসে পরিবর্তন আনতে হবে। (খাবারের সময় দেখা যায় ভাতের পরিমানের তুলনায় সবজির থাকে খুবই কম। এই সিস্টেমকে উল্টো করতে হবে।প্লেটের হাফ থাকবে সবজি এবং তার হাফ হচ্ছে ভাত এবং বাকি থাকবে প্রোটিন জাতীয় খাবার।)
  • ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণের তিনটি নিয়ম মানতে হবে।নিয়ম তিনটি ( 3D- Diet, Discipline, Drug)
  • ডায়বেটিস রোগীর অবশ্যই ডায়েট চার্ট থাকতে হবে। তাকে সুশৃঙ্খল জীবনযাপন করতে। এবং ওষুধ গ্রহণ করতেই হবে।    

ডায়াবেটিস রোগীর খাবার নিয়ে কিছু কথাঃ

আপনার ডায়াবেটিস হলে আপনি বিভিন্নি ধরনের খাবার খেতে পারবেন, কিন্তু অবশ্যই নির্দিষ্ট কিছু খাবার আছে, যা পরিমাণ মত খেতে হবে।

এই জন্য কয়েকটি বিষয়য়ের প্রতি খেয়াল রাখতে হবেঃ

  • নানান রকমের ফলমূল, শাকসবজি ও কিছু শ্বেতসার-জাতীয় খাবার খাওয়া।
  • চিনি, চর্বি ও লবন যুক্ত খাবারের পরিমাণ কমিয়ে ফেলতে হবে।
  • কোনো বেলার খাবার বাদ না দিয়ে প্রতিদিন সময়মত সকাল, দুপুর ও রাতের খাবার খাওয়া।

ডায়াবেটিস খাবার নিয়ে কিছু ভুল ধারনাঃ

ডায়াবেটিস রোগের খাবার নিয়ে অনেক সময় কিছু ভুল ধারনা মানুষের মধ্যে দেখা যায়-

  • অতিরিক্ত চিনি খাওয়া ডায়াবেটিসের কারণ
  • ডায়াবেটিস হলে আপনাকে অবশ্যই সবার থেকে আলাদা খাবার খেতে হবে
  • মিষ্টি জাতীয় খাবার একেবারেই খেতে পারবেন না
  • একেবারেই শর্করা সমৃদ্ধ খাবার খেতে পারবেন না

ডায়াবেটিস হলে কোন কোন খাবার খেতে পারবেন?

ডায়াবেটিস রোগীর খাবার মানে সকল খাবারের গ্রুপ থেকে বিভিন্ন স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া। খাবারের গ্রুপ গুলো হলঃ

শাক সবজিননস্টার্চি: সবুজ শাক , গাজর , ব্রোকলি, মরিচ এবং টমেটো
স্টার্চি: ভুট্টা , আলু এবং সবুজ মটর ইত্যাদি  
ফল  কমলা, তরমুজ, বেরি, আপেল, কলা, আঙ্গুর, বড়ই ইত্যাদি
শস্যগম, চাল, কর্নমিল, বার্লি, ওটস, কুইনোয়া ইত্যাদি
উদাহরণ: রুটি, পাস্তা, সিরিয়াল  
শর্করালাল আটার রুটি
পাউরুটি
লাল বা বাদামী চালের ভাত
নান রুটি
কাঁচ কলা ইত্যাদি  
প্রোটিন  মাংস চামড়া ছাড়া মুরগি বা টার্কি
মাছ
ডিম
বাদাম এবং চিনাবাদাম
শুকনো মটরশুটি এবং মটর, যেমন ছোলা
শিম ইত্যাদি
দুধ ও দুগ্ধজাত – নন ফ্যাট বা কম ফ্যাটদই,
ছানা,
পনির ইত্যাদি
চর্বিবিভিন্ন ধরনের তেল, মাখন ইত্যাদি

ফল ও শাক-সবজি :

ফলমূল ও শাক-সবজিতে ভিটামিন ডি, খনিজ পদার্থ ও আঁশ প্রচুর পরিমাণে থাকে। কিন্তু ক্যালরির পরিমাণ অনেক কম থাকে। তাই এগুলো ডায়াবেটিস রোগীর খাবার তালিকায় রাখা উচিৎ।

ডায়াবেটিস রোগের খাবার তালিকায় কি পরিমাণে ফল ও শাক-সবজি রাখবেন?

প্রতিদিন কমপক্ষে ৫ পরিবেশন ফল ও শাক-সবজি খাওয়া উচিৎ। হাতের তালুতে যতটুকু খাবার উঠে তাকেই ১ পরিবেশন বলে।

শর্করা জাতীয় খাবার :

অনেক শর্করা জাতীয় খাবার আছে যা খুব তাড়াতাড়ি রক্তে সুগার লেবেল বাড়িয়ে দেয়। ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা অনেক কঠিন হয়ে পড়ে। এই সব খাবারকে বলা হয় উচ্চ গ্লাইসেমিক সূচকযুক্ত খাবার। তাই কম গ্লাইসেমিক খাবার ডায়াবেটিস রোগীর খাবার তালিকায় রাখা উচিৎ।

ডায়াবেটিস রোগের খাবার তালিকায় কি পরিমাণ শর্করা জাতীয় খাবার রাখবেন?

অল্প পরিমাণে শর্করা জাতীয় খাদ্য প্রতিদিন খাওয়ার চেষ্টা করা উচিৎ।

প্রোটিন জাতীয় খাবার

প্রোটিন জাতীয় খাবার পেশীকে সুস্থ রাখে। ডিম, মাছ ও মাংসে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে। তাছাড়া শিম, বরবটি, ডাল, বাদাম, বীন জাতীয় খাবারেও প্রোটিন থাকে। এইগুলো খাবার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন

ডায়াবেটিস রোগের খাবার তালিকায় কি পরিমাণ প্রোটিন জাতীয় খাবার রাখবেন?

এই গ্রুপ থেকে প্রতিদিন কিছু পরিমাণ খাবার আপনার তালিকায় রাখার চেষ্টা করবেন। প্রতিদিন মাংস খাবেন না এবং সপ্তাহে ১ বা ২ দিন তৈলাক্ত মাছ খেতে পারেন।

দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার

দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার হাড় ও দাতের গঠনের জন্য উপকারী। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম থাকে। অনেক দুগ্ধজাত খাবার রয়েছে যেখানে প্রচুর পরিমাণে চর্বি ও ফ্যাট থাকে। তাই কম চর্বি যুক্ত খাবার আপনার তালিকায় রাখা উচিৎ।

ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকায় কি পরিমাণ দুগ্ধজাত খাবার রাখবেন?

দৈনিক গড়ে ১০০০ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম আমাদের খাবার তালিকায় রাখবেন।

ডায়াবেটিস রোগীর খাবার তালিকায় যেসব খাবার কম রাখবেন-



চলুন দেখে নেই ডায়াবেটিস রোগীরা যেসব খাবার কম খাবেনঃ

⇒ মিষ্টি জাতীয় খাবার কম খাবেন
⇒ খুব কম পরিমাণে শর্করা সমৃদ্ধ খাবার খাবেন
⇒ অতিরিক্ত রান্না করা খাবার কম খাবেন
⇒ স্যাচুরেটেড এবং ট্রান্স ফ্যাট জাতীয় খাবার যেমনঃ ফ্রাইস, চিপস, বেকিং জাতীয় খাবার কম খাবেন
⇒ প্রক্রিয়াজাত খাবার যেমনঃ ফাস্টফুড ইত্যাদি কম খাবেন
⇒ গরু, খাসি, ও পাখির মাংস কম খাবেন

ডায়াবেটিস রোগীর খাবার তালিকায় যেসব খাবার বেশি রাখবেন-

চলুন দেখে নেই ডায়াবেটিস রোগীরা যেসব খাবার বেশি খাবেনঃ

⇒ ফলমূল ও শাক সবজি খাবেন
⇒ উপকারী চর্বি জাতীয় খাবার যেমনঃ বাদাম, অলিভওয়েল ইত্যাদি খাবেন
⇒ ভাল প্রোটিন জাতীয় খাবার খাবেন
⇒ কম চিনি জাতীয় খাবার খাবেন
⇒ দেশি মাছ,মুরগি খাবেন

ডায়াবেটিস রোগীর খাবার

কিছু খাবার রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে এবং এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা পালন করে। নিচে ১০টি খাবার দেয়া আছে যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

১) সবুজ শাক-সবজিঃ

সবুজ, শাক -সবজিতে ক্যালোরি কম থাকে কিন্তু অত্যন্ত পুষ্টিকর। তারা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও প্রধান ভূমিকা পালন করে। এই সব খাবারে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, খনিজ পদার্থ থাকে।

এই রকম কয়েকটি শাক সবজির নামঃ

  • পালং শাক,
  • কলা
  • বাধাকপি
  • ব্রকোলি
  • এবং অন্যান্য শাক সবজি

২) ফ্যাটি মাছ

ফ্যাটি মাছ একটি পুষ্টিকর খাবার। ফ্যাটি মাছে গুরুত্বপূর্ণ ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে যাকে বলা হয় ইকোসাপেন্টেনয়েক এসিড (ইপিএ) এবং ডোকোসাহেক্সেনোয়িক এসিড (ডিএইচএ)। যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি হার্ট ও মস্তিষ্কের জন্যও উপকারী।

যেমনঃ

  • সালমন
  • সারডিন
  • ম্যাকেরেল
  • হেরিং
  • টুনা

৩) দারুচিনি

দারুচিনি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা পালন করে। কারণ এতে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে যা রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সহায়তা করে।

৪) গ্রিক ইওগার্ট

গ্রিক ইওগার্ট ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে এবং হৃদ রোগের ঝুঁকি কমাতে ভূমিকা পালন করে। এটি কোলেষ্টেরল লেভেল ঠিক রাখতে এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিস নিরাময়ের ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখে।

প্রচলিত ইওগার্টের তুলনায় গ্রিক ইওগার্টে কম কার্বোহাইড্রেট ও বেশি প্রোটিন থাকে। যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।

আপনি সকালে নাস্তা হিসেবে ইওগার্টের সাথে বেরিস ও বাদাম যুক্ত করতে পারেন।

৫) বাদাম

বাদাম জাতীয় খাবার ডায়েট চার্টে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।

এইসব খাবারে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড থাকে। এই ফ্যাটি এসিড হৃদপিন্ডের সুরক্ষার জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

ডায়াবেটিস রোগীদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই এই ধরণের ফ্যাটি এসিড খাবারের সাথে গ্রহন করা খুবই প্রয়োজন। এতে আমিষ, ভিটামিন বি-৬, ম্যাগনেসিয়াম এবং আয়রন রয়েছে।

৬) আপেল সিডার ভিনেগার

আপেল সিডার ভিনেগারে কম কার্বোহাইড্রেট রয়েছে। এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।

একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা ঘুমানোর আগে দুই টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা ৬% হ্রাস পায়।

৭) বেরিস

বেরিস এমন কটি ফল যাতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে উপাদান থাকে, যা অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সহায়তা করে।

গবেষণায় দেখা যায় যে, ডায়াবেটিস রোগীদের অক্সিডেটিভ স্ট্রেসে ভুগার রেকর্ড থাকে।

ব্লু বেরিস, ব্ল্যাক বেরিস, স্ট্র বেরিসে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে এবং ফাইবার থাকে। এতে আরও যা যা থাকে তা হলঃ

  • ভিটামিন সি
  • ভিটামিন কে
  • পটাসিয়াম
  • ম্যাঙ্গানিজ, ইত্যাদি।

প্রতিদিন সকালে নাস্তায় বেরিস খেতে পারেন।

৮) সাইট্রাস জাতীয় ফল

গবেষণায় দেখা গেছে, সাইট্রাস জাতীয় ফল যেমনঃ কমলা, লেবু, আঙ্গুর ইত্যাদি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। শর্করা ছাড়া ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ পাওয়ার একটি দুর্দান্ত উপায় হল সাইট্রাস জাতীয় ফল খাওয়া।

সাইট্রাস ফলে যা যা রয়েছেঃ

  • ভিটামিন সি
  • পটাশিয়াম
  • ফলেট

৯) মিষ্টি আলু

মিষ্টি আলু ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এতে যা যা উপাদান আছে-

  • ভিটামিন সি
  • ভিটামিন এ
  • ফাইবার
  • পটাশিয়াম

আপনি এই মিষ্টি আলু বিভিন্নভাবে খাওয়ার অভ্যাস (যেমন সেদ্ধ বা রোস্ট করে)  করতে পারেন। তাছাড়া মিষ্টি আলুর সাথে প্রোটিন এবং সবুজ শাক-সবজি যুক্ত করে খেতে পারেন।

১০) রসুন

রসুন স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। গবেষণায় দেখা গেছে, টাইপ- 2 ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে এটি ভুমিকা রাখে।

তাছাড়া রসুনে ক্যালরিও কম থাকে।

ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা জানতে নিচের ভিডিওটি দেখতে পারেন –

ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা
আরও পড়ুনঃ রক্তশূন্যতা দূর করার উপায় : রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়বে যেসব খাবারে

ডায়াবেটিস রোগীর খাবার তালিকা

চলুন দেখে নিই ডায়াবেটিস রোগীর সকালের, বিকালের ও রাতের খাবারের তালিকা-

ডায়াবেটিস রোগীর সকালের খাবার 

সকাল ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে সকালের নাস্তা শেষ করতে হবে। দেরি হলেও সকাল ৯টার পর মধ্যে নাস্তা খাওয়া উচিৎ।

আপনার পছন্দ মত রুটি/চিড়া/খই/ মুড়ি/ওটস্ খেতে পারেন। এর সাথে ডিম ও নিরামিষ যুক্ত করে খেতে পারেন।

ডায়াবেটিস রোগীর মধ্য সকালের খাবার

আপনার পছন্দমত একটা ফল সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে খেতে পারেন। যদি মিষ্টি ফল খেতে চান তাহলে ১/২ কাপ খাবেন।

ডায়াবেটিস রোগীর দুপুরের খাবার

দুপুর বেলা  ১.০০ থেকে ২.০০ টার মধ্যে আপনার পরিমানমত ভাত, মাছ/মুরগীর মাংস, শাকসবজি, সালাদ ও লেবু ইত্যাদি খেতে পারেন।

ডায়াবেটিস রোগের বিকালের নাস্তা

বিকালের নাস্তায় আপনি সুপ, ছোলা, চিনি ছাড়া বিস্কুট, মিষ্টি ছাড়া পিঠা, বাদাম, মুড়ি, রং চা ইত্যাদি খেতে পারেন।

ডায়াবেটিস রোগীর রাতের খাবার

রাতে ৮.৩০ টা থেকে ৯.৩০টার মধ্যে আপনার পছন্দমতো এবং পরিমানমতো রুটি বা ভাত বা ওটস খেতে পারেন। সাথে দুপুরের মতো মাছ/মুরগী, সবজি, সালাদ, লেবু  ইত্যাদি খেতে পারেন।

ডায়াবেটিস রোগীর শোবার আাগের খাবার

রাতে শোবার এক ঘণ্টা আগে এক কাপ দুধ আপনি খেয়ে নিবেন। দুধে সমস্যা থাকলে পরিমাণমতো দই, ছানা পনিরও ইত্যাদি খেতে পারেন।

ডায়াবেটিস রোগীর ডায়েট চার্ট

আপনাদের সুবিধার জন্য একটি ১৬০০ ক্যালরির ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা নিচে দেয়া হল-

সকালের নাস্তা (সকাল ৮.০০-৮.৩০)
রুটি১ টি গমের আটার রুটি (মিডিয়াম সাইজের)
দুধ১গ্লাস ফ্যাট ছাড়া দুধ বা স্কিম মিল্ক
ডিম১ টি মুরগি বা হাঁসের ডিম ( সিদ্ধ বা ভাঁজি)
শাকসবজি১ কাপ পাতা যুক্ত শাক বা ১/২ কাপ সবজি
দুপুরের খাবার (দুপুর ১.৩০-২.০০)
ভাতদেড় কাপ ভাত
মাছ অথবা মাংস৬০ গ্রাম পরিমাণ ফ্যাট ছাড়া মাছ বা মাংস (রান্না করা)
শাক সবজিপাতা যুক্ত শাক ১ কাপ বা ১/২ কাপ সবজি
ডাল১ কাপ মাঝারি ঘন ডাল
বিকালের নাস্তা (বিকাল ৫.৩০-৬.০০)
সিজনার ফল১ সারভিং পছন্দমত সিজনার ফল
বাদাম,বুট অথবা কলাই সমৃদ্ধ খাবার১/৪ কাপ বাদাম, বুট বা কলাই সমৃদ্ধ খাবার
রাতের খাবার (রাত ৯.০০-৯.৩০)
ভাত বা রুটি১ আটার রুটি বা ১/২ কাপ ভাত
মাছ বা মাংস৬০ গ্রাম পরিমাণ ফ্যাট ছাড়া মাংস বা মাছ (রান্না করা)
শাক সবজি১ কাপ পাতা যুক্ত শাক অবশ্যই থাকবে বাকি ১/২ কাপ সবজি
সিজনার ফল১ সারভিং সিজনার ফল

ডায়াবেটিস রোগীর খাবার তালিকা সমূহ মেনে চলে আপনি সহজেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন। আজ এই পর্যন্তই। ধন্যবাদ।