সুরা মুলক (surah mulk)
মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ আল-কুরআনের ৬৭ তম সূরা হচ্ছে সূরা মুলক (surah mulk)। (আরবি ভাষায়: الملك) ।এর আয়াত সংখ্যা ৩০ এবং রূকু সংখ্যা ২। সূরা মূলক মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। আল-মুলক অর্থ – সার্বভৌম কর্তৃত্ব। এই সূরাটির প্রথম আয়াতের تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ الْمُلْكُ বাক্যাংশের الْمُلْكُ অংশ থেকে এই সূরার নামটি গৃহীত হয়েছে।
সূরা মূলক আরবি (surah mulk bangla)
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ الْمُلْكُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
الَّذِي خَلَقَ الْمَوْتَ وَالْحَيَاةَ لِيَبْلُوَكُمْ أَيُّكُمْ أَحْسَنُ عَمَلًا وَهُوَ الْعَزِيزُ الْغَفُورُ
الَّذِي خَلَقَ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ طِبَاقًا مَا تَرَى فِي خَلْقِ الرَّحْمَنِ مِنْ تَفَاوُتٍ فَارْجِعِ الْبَصَرَ هَلْ تَرَى مِنْ فُطُورٍ
ثُمَّ ارْجِعِ الْبَصَرَ كَرَّتَيْنِ يَنْقَلِبْ إِلَيْكَ الْبَصَرُ خَاسِئًا وَهُوَ حَسِيرٌ
وَلَقَدْ زَيَّنَّا السَّمَاءَ الدُّنْيَا بِمَصَابِيحَ وَجَعَلْنَاهَا رُجُومًا لِلشَّيَاطِينِ وَأَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابَ السَّعِيرِ
وَلِلَّذِينَ كَفَرُوا بِرَبِّهِمْ عَذَابُ جَهَنَّمَ وَبِئْسَ الْمَصِيرُ
إِذَا أُلْقُوا فِيهَا سَمِعُوا لَهَا شَهِيقًا وَهِيَ تَفُورُ
تَكَادُ تَمَيَّزُ مِنَ الْغَيْظِ كُلَّمَا أُلْقِيَ فِيهَا فَوْجٌ سَأَلَهُمْ خَزَنَتُهَا أَلَمْ يَأْتِكُمْ نَذِيرٌ
قَالُوا بَلَى قَدْ جَاءَنَا نَذِيرٌ فَكَذَّبْنَا وَقُلْنَا مَا نَزَّلَ اللَّهُ مِنْ شَيْءٍ إِنْ أَنْتُمْ إِلَّا فِي ضَلَالٍ كَبِيرٍ
وَقَالُوا لَوْ كُنَّا نَسْمَعُ أَوْ نَعْقِلُ مَا كُنَّا فِي أَصْحَابِ السَّعِيرِ
فَاعْتَرَفُوا بِذَنْبِهِمْ فَسُحْقًا لِأَصْحَابِ السَّعِيرِ
إِنَّ الَّذِينَ يَخْشَوْنَ رَبَّهُمْ بِالْغَيْبِ لَهُمْ مَغْفِرَةٌ وَأَجْرٌ كَبِيرٌ
وَرُّوا قَوْلَكُمْ أَوِ اجْهَرُوا بِهِ إِنَّهُ عَلِيمٌ بِذَاتِ الصُّدُورِ
أَلَا يَعْلَمُ مَنْ خَلَقَ وَهُوَ اللَّطِيفُ الْخَبِيرُ
هُوَ الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ الْأَرْضَ ذَلُولًا فَامْشُوا فِي مَنَاكِبِهَا وَكُلُوا مِنْ رِزْقِهِ وَإِلَيْهِ النُّشُورُ
أَأَمِنْتُمْ مَنْ فِي السَّمَاءِ أَنْ يَخْسِفَ بِكُمُ الْأَرْضَ فَإِذَا هِيَ تَمُورُ
أَمْ أَمِنْتُمْ مَنْ فِي السَّمَاءِ أَنْ يُرْسِلَ عَلَيْكُمْ حَاصِبًا فَسَتَعْلَمُونَ كَيْفَ نَذِيرِ
وَلَقَدْ كَذَّبَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ فَكَيْفَ كَانَ نَكِيرِ
أَوَلَمْ يَرَوْا إِلَى الطَّيْرِ فَوْقَهُمْ صَافَّاتٍ وَيَقْبِضْنَ مَا يُمْسِكُهُنَّ إِلَّا الرَّحْمَنُ إِنَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ بَصِيرٌ
أَمَّنْ هَذَا الَّذِي هُوَ جُنْدٌ لَكُمْ يَنْصُرُكُمْ مِنْ دُونِ الرَّحْمَنِ إِنِ الْكَافِرُونَ إِلَّا فِي غُرُورٍ
أَمَّنْ هَذَا الَّذِي يَرْزُقُكُمْ إِنْ أَمْسَكَ رِزْقَهُ بَلْ لَجُّوا فِي عُتُوٍّ وَنُفُورٍ
أَفَمَنْ يَمْشِي مُكِبًّا عَلَى وَجْهِهِ أَهْدَى أَمَّنْ يَمْشِي سَوِيًّا عَلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ
قُلْ هُوَ الَّذِي أَنْشَأَكُمْ وَجَعَلَ لَكُمُ السَّمْعَ وَالْأَبْصَارَ وَالْأَفْئِدَةَ قَلِيلًا مَا تَشْكُرُونَ
قُلْ هُوَ الَّذِي ذَرَأَكُمْ فِي الْأَرْضِ وَإِلَيْهِ تُحْشَرُونَ
وَيَقُولُونَ مَتَى هَذَا الْوَعْدُ إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِينَ
قُلْ إِنَّمَا الْعِلْمُ عِنْدَ اللَّهِ وَإِنَّمَا أَنَا نَذِيرٌ مُبِينٌ
فَلَمَّا رَأَوْهُ زُلْفَةً سِيئَتْ وُجُوهُ الَّذِينَ كَفَرُوا وَقِيلَ هَذَا الَّذِي كُنْتُمْ بِهِ تَدَّعُونَ
قُلْ أَرَأَيْتُمْ إِنْ أَهْلَكَنِيَ اللَّهُ وَمَنْ مَعِيَ أَوْ رَحِمَنَا فَمَنْ يُجِيرُ الْكَافِرِينَ مِنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ
قُلْ هُوَ الرَّحْمَنُ آمَنَّا بِهِ وَعَلَيْهِ تَوَكَّلْنَا فَسَتَعْلَمُونَ مَنْ هُوَ فِي ضَلَالٍ مُبِينٍ
قُلْ أَرَأَيْتُمْ إِنْ أَصْبَحَ مَاؤُكُمْ غَوْرًا فَمَنْ يَأْتِيكُمْ بِمَاءٍ مَعِينٍ
সূরা মুলক বাংলা উচ্চারণ (surah mulk bangla)
(বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম)
(১) তাবা-রাকাল্লাযী বিয়াদিহিল মুলকু ওয়া হুওয়া ‘আলা- কুল্লি শাইয়িন কাদীর।
(২) আল্লাযী খালাকাল মাওতা ওয়াল হায়া-তা লিইয়াবলুওয়াকুম আইয়ুকুম আহছানু‘আমালাওঁ ওয়া হুওয়াল ‘আঝীঝুল গাফূর।
(৩) আল্লাযী খালাকা ছাব‘আ ছামা-ওয়া-তিন তিবা-কান মা- তারা- ফী খালকির রাহমা-নি মিন তাফা-উত ফারজি‘ইল বাসারা হাল তারা- মিন ফুতূর।
(৪) ছু ম্মার জি’ইলবাসারা কাররাতাইনি ইয়ানকালিব ইলাইকাল বাসারু খা-ছিআওঁ ওয়া হুওয়া হাছীর।
(৫) ওয়া লাকাদ ঝাইয়ান্নাছ ছামাআদ্দুনইয়া- বিমাসা-বীহা ওয়াজা’আলনা- হা- রুজূমাল লিশশায়া-তীনি ওয়া আ’তাদনা- লাহুম ‘আযা- বাছছা’ঈর।
(৬)ওয়া লিল্লাযীনা কাফারূবিরাব্বিহিম ‘আযা- বুজাহান্নামা ওয়াবি’ছাল মাসীর।
(৭) ইযাউলকূফীহা- ছামি’উ লাহা- শাহীকাওঁ ওয়াহিয়া তাফূর।
(৮) তাকা- দুতামাইয়াঝুমিনাল গাইজি কুল্লামাউলকিয়া ফীহা- ফাওজুন ছাআলাহুম খাঝানাতুহাআলাম ইয়া’তিকুম নাযীর।
(৯) কা- লূবালা- কাদ জাআনা- নাযীরুন ফাকাযযাবনা- ওয়া কুলনা- মানাঝঝালাল্লা- হু মিন শাইয়িন ইন আনতুম ইল্লা- ফী দালা- লিন কাবীর।
(১০) ওয়া কা-লূলাও কুন্না- নাছমা’উ আও না’কিলুমা- কুন্না-ফীআসহা-বিছছা’ঈর।
(১১) ফা’তারাফূবিযামবিহিম ফাছুহক্বললিআসহা-বিছ ছা’ঈর।
(১২) ইন্নাল্লাযীনা ইয়াখশাওনা রাব্বাহুম বিলগাইবি লাহুম মাগফিরাতুওঁ ওয়া আজরুন কাবীর।
(১৩) ওয়া আছিররূকাওলাকুম আবিজহারূবিহী ইন্নাহূ’আলীমুম বিযা- তিসসুদূ র।
(১৪) আলা- ইয়া’লামুমান খালাকা ওয়া হুওয়াল্লাতীফুল খাবীর।
(১৫) হুওয়াল্লাযী জা’আলা লাকুমুল আরদা যালূলান ফামশূফী মানা-কিবিহা- ওয়া কুলূমির রিঝকিহী ওয়া ইলাইহিন নুশূর।
(১৬) আ আমিনতুম মান ফিছছামাই আইঁ ইয়াখছিফা বিকুমুল আরদা ফাইযা- হিয়া তামূর।
(১৭) আম আমিনতুম মান ফিছছামাই আইঁ ইউরছিলা ‘আলাইকুম হা-সিবান ফাছাতা’লামূনা কাইফা নাযীর।
(১৮) ওয়া লাকাদ কাযযাবাল্লাযীনা মিন কাবলিহিম ফাকাইফা কা- না নাকীর।
(১৯) আওয়ালাম ইয়ারাও ইলাত্তাইরি ফাওকাহুম সাফফা-তিওঁ ওয়াইয়াকবিদন । মাইউমছিকুহুন্না ইল্লাররাহমা-নু ইন্নাহূবিকুল্লি শাইয়িম বাসীর।
(২০)আম্মান হা-যাল্লাযী হুওয়া জুনদুল্লাকুম ইয়ানসুরুকুম মিন দূ নিররাহমা-নি ইনিল কাফিরূনা ইল্লা- ফী গুরূর।
(২১) আম্মান হা- যাল্লাযী ইয়ারঝকুকুম ইন আমছাকা রিঝকাহূ বাল্লাজ্জূফী ‘উতুওবিওয়া নুফূর।
(২২) আফামাইঁ ইয়ামশী মুকিব্বান ‘আলা- ওয়াজহিহী আহদা আম্মাইঁ ইয়ামশী ছাবি ইয়ান ‘আলা-সিরা-তিমমুছতাকীম।
(২৩) কুল হুওয়াল্লাযীআনশাআকুম ওয়া জা‘আলা লাকুমুছছাম‘আ ওয়াল আবসা-রা ওয়াল আফইদাতা কালীলাম মা-তাশকুরূন।
(২৪) কুল হুওয়াল্লাযী যারাআকুম ফিল আরদিওয়া ইলাইহি তুহশারূন।
(২৫) ওয়া ইয়াকূলূনা মাতা-হা-যাল ওয়া’দুইন কুনতুম সা-দিকীন।
(২৬) কুল ইন্নামাল ‘ইলমু’ইনদাল্লা- হি ওয়া ইন্নামাআনা নাযীরুম মুবীন।
(২৭) ফালাম্মা-রাআওহু ঝুলফাতান ছীআত ঊজূহুল্লাযীনা কাফারূওয়া কীলা হা-যাল্লাযী কুনতুম বিহী তাদ্দা’ঊন।
(২৮) কুল আরাআইতুম ইন আহলাকানিয়াল্লা-হু ওয়া মাম্মা‘ইয়া আও রাহিমানা- ফামাইঁ ইউজীরুল কা-ফিরীনা মিন ‘আযা-বিন আলীম।
(২৯) কুল হুওয়াররাহমা-নুআ-মান্না-বিহী ওয়া’আলাইহি তাওয়াক্কালনা-, ফাছাতা’লামূনা মান হুওয়া ফী দালা-লিম মুবীন।
(৩০) কুল আরাআইতুম ইন আসবাহা মাউকুম গাওরান ফামাইঁ ইয়া’তীকুম বিমাইম মা’ঈন।
সূরা মূলক বাংলা পিডিএফ (surah mulk bangla uccharon pdf)
সূরা মূলক বাংলা পিডিএফ পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করুনঃ
সূরা মূলক বাংলা অর্থ (surah mulk bangla ortho)
পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
(১)বরকতময় তিনি যার হাতে সর্বময় কর্তৃত। আর তিনি সব কিছুর ওপর সর্বশক্তিমান।
(২)যিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন যাতে তিনি তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে পারেন যে, কে তোমাদের মধ্যে আমলের দিক থেকে উত্তম। আর তিনি মহাপরাক্রমশালী, অতিশয় ক্ষমাশীল।
(৩) যিনি সাত আসমান স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন। পরম করুণাময়ের সৃষ্টিতে তুমি কোনো অসামঞ্জস্য দেখতে পাবে না। তুমি আবার দৃষ্টি ফিরাও, কোনো ত্রুটি দেখতে পাও কি?
(৪)অতঃপর তুমি দৃষ্টি ফিরাও একের পর এক, সেই দৃষ্টি অবনমিত ও ক্লান্ত হয়ে তোমার দিকে ফিরে আসবে।
(৫)আমি নিকটবর্তী আসমানকে প্রদীপপঞ্জু দ্বারা সুশোভিত করেছি এবং সেগুলোকে শয়তানদের প্রতি নিক্ষেপের বস্তু বানিয়েছি। আর তাদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছি জ্বলন্ত আগুনের আজাব।
(৬)আর যারা তাদের রবকে অস্বীকার করে, তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আজাব। আর কতইনা নিকৃষ্ট সেই প্রত্যাবর্তনস্থল!
(৭)যখন তাদেরকে তাতে নিক্ষেপ করা হবে, তখন তারা তার বিকট শব্দ শুনতে পাবে। আর তা উথলিয়ে উঠবে।
(৮) ক্রোধে তা ছিন্ন ভিন্ন হবার উপক্রম হবে। যখনই তাতে কোনো দলকে নিক্ষেপ করা হবে, তখন তার প্রহরীরা তাদেরকে জিজ্ঞাসা করবে, ‘তোমাদের নিকট কি কোনো সতর্ককারী আসেনি’?
(৯) তারা বলবে, ‘হ্যা, আমাদের নিকট সতর্ককারী এসেছিল। তখন আমরা (তাদেরকে) মিথ্যাবাদী আখ্যায়িত করেছিলাম এবং বলেছিলাম, ‘আল্লাহ কিছুই নাজিল করেননি। তোমরা তো ঘোর বিভ্রান্তিতে রয়েছ’।
(১০) আর তারা বলবে, ‘যদি আমরা শুনতাম অথবা বুঝতাম, তাহলে আমরা জ্বলন্ত আগুনের অধিবাসীদের মধ্যে থাকতাম না’।
(১১)অতঃপর তারা তাদের অপরাধ স্বীকার করবে। অতএব, ধ্বংস জ্বলন্ত আগুনের অধিবাসীদের জন্য।
(১২) নিশ্চয় যারা তাদের রবকে না দেখেই ভয় করে তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও বড় প্রতিদান।
(১৩) আর তোমরা তোমাদের কথা গোপন কর অথবা তা প্রকাশ কর, নিশ্চয় তিনি অন্তরসমূহে যা আছে সে বিষয়ে সম্যক অবগত।
(১৪)যিনি সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি জানেন না? অথচ তিনি অতি সূক্ষদর্শী, পূর্ণ অবহিত।
(১৫) তিনিই তো তোমাদের জন্য জামিনকে সুগম করে দিয়েছেন, কাজেই তোমরা এর পথে-প্রান্তরে বিচরণ কর এবং তাঁর রিজিক থেকে তোমরা আহার কর। আর তাঁর নিকটই পুনরুত্থান।
(১৬)যিনি আসমানে আছেন, তিনি তোমাদের সহ জমিন ধসিয়ে দেয়া থেকে কি তোমরা নিরাপদ হয়ে গেছ, অতঃপর আকস্মিকভাবে তা থর থর করে কাঁপতে থাকবে।
(১৭) যিনি আসমানে আছেন, তিনি তোমাদের ওপর পাথর নিক্ষেপকারী ঝড়ো হাওয়া পাঠানো থেকে তোমরা কি নিরাপদ হয়ে গেছ, তখন তোমরা জানতে পারবে কেমন ছিল আমার সতর্কবাণী?
(১৮)আর অবশ্যই তাদের পূর্ববর্তীরাও অস্বীকার করেছিল। ফলে কেমন ছিল আমার প্রত্যাখ্যান (এর শাস্তি)?
(১৯) তারা কি লক্ষ্য করেনি তাদের উপরস্থ পাখিদের প্রতি, যারা ডানা বিস্তার করে ও গুটিয়ে নেয়? পরম করুণাময় ছাড়া অন্য কেউ এদেরকে স্থির রাখে না। নিশ্চয় তিনি সব কিছুর সম্যক দ্রষ্টা।
(২০)পরম করুণাময় ছাড়া তোমাদের কি আর কোনো সৈন্য আছে, যারা তোমাদেরকে সাহায্য করবে? কাফিররা শুধু তো ধোঁকায় নিপতিত।
(২১) অথবা এমন কে আছে, যে তোমাদেরকে রিজিক দান করবে যদি আল্লাহ তাঁর রিজিক বন্ধ করে দেন? বরং তারা অহমিকা ও অনীহায় নিমজ্জিত হয়ে আছে।
(২২) যে ব্যক্তি উপুড় হয়ে মুখের ওপর ভর দিয়ে চলে সে কি অধিক হেদায়াতপ্রাপ্ত নাকি সেই ব্যক্তি যে সোজা হয়ে সরল পথে চলে?
(২৩)বলো, ‘তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের জন্য শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি এবং অন্তকরণসমূহ দিয়েছেন। তোমরা খুব অল্পই শোকর কর’।
(২৪) বলো, ‘তিনিই তোমাদেরকে জমিনে সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁর কাছেই তোমাদেরকে সমবেত করা হবে’।
(২৫)আর তারা বলে, ‘সে ওয়াদা কখন বাস্তবায়িত হবে, যদি তোমরা সত্যবাদী হও’।
(২৬) বলো, ‘এ বিষয়ের জ্ঞান আল্লাহরই নিকট। আর আমি তো স্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র’।
(২৭) অতঃপর তারা যখন তা আসন্ন দেখতে পাবে, তখন কাফিরদের চেহারা মলিন হয়ে যাবে এবং বলা হবে, ‘এটাই হলো তা, যা তোমরা দাবী করছিলে’।
(২৮) বলো, ‘তোমরা ভেবে দেখেছ কি’? যদি আল্লাহ আমাকে এবং আমার সঙ্গে যারা আছে, তাদেরকে ধ্বংস করে দেন অথবা আমাদের প্রতি দয়া করেন, তাহলে কাফিরদেরকে যন্ত্রণাদায়ক আজাব থেকে কে রক্ষা করবে’?
(২৯)বলো, ‘তিনিই পরম করুণাময়। আমরা তাঁর প্রতি ঈমান এনেছি এবং তাঁর ওপর তাওয়াক্কুল করেছি। কাজেই তোমরা অচিরেই জানতে পারবে কে স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে রয়েছে’?
(৩০) বলো, ‘তোমরা ভেবে দেখেছ কি, যদি তোমাদের পানি ভূগর্ভে চলে যায়, তাহলে কে তোমাদেরকে বহমান পানি এনে দিবে’?
আরও পড়ুনঃ আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ, বাংলা অর্থ, আরবি অডিও এবং পিডিএফ
Surah Mulk English
Bismillaahir Rahmaanir Raheem
(1)Tabaarakal lazee biyadihil mulku wa huwa ‘alaa kulli shai-in qadeer.
(2)Allazee khalaqal mawta walhayaata liyabluwakum ayyukum ahsanu ‘amalaa; wa huwal ‘azeezul ghafoor.
(3)Allazee khalaqa sab’a samaawaatin tibaaqam maa taraa fee khalqir rahmaani min tafaawut farji’il basara hal taraa min futoor.
(4)Summar ji’il basara karrataini yanqalib ilaikal basaru khaasi’anw wa huwa haseer.
(5)Wa laqad zaiyannas samaaa’ad dunyaa bimasaa beeha wa ja’alnaahaa rujoomal lish shayaateeni wa a’tadnaa lahum ‘azaabas sa’eer.
(6)Wa lillazeena kafaroo bi rabbihim ‘azaabu jahannama wa bi’sal maseer.
(7)Izaaa ulqoo feehaa sami’oo lahaa shaheeqanw wa hiya tafoor.
(8)Takaadu tamayyazu minal ghaizz kullamaaa ulqiya feehaa fawjun sa alahum khazanatuhaaa alam ya’tikum nazeer.
(9)Qaaloo balaa qad jaaa’anaa nazeerun fakazzabnaa wa qulnaa maa nazzalal laahu min shai in in antum illaa fee dalaalin kabeer.
(10) Wa qaaloo law kunnaa nasma’u awna’qilu maa kunnaa feee as haabis sa’eer.
(11)Fa’tarafoo bizambihim fasuhqal li as haabis sa’eer.
(12)Innal lazeena yakhshawna rabbahum bilghaibi lahum maghfiratunw wa ajrun kabeer.
(13)Wa asirroo qawlakum awijharoo bih; innahoo ‘aleemum bizaatis sudoor.
(14)Alaa ya’lamu man khalaqa wa huwal lateeful khabeer.
(15)Huwal lazee ja’ala lakumul arda zaloolan famshoo fee manaakibihaa wa kuloo mir rizqih; wa ilaihin nushoor.
(16)‘A-amintum man fissamaaa’i aiyakhsifa bi kumul arda fa izaa hiya tamoor.
(17)Am amintum man fissamaaa’i ai yursila ‘alaikum haasiban fasata’lamoona kaifa nazeer.
(18)Wa laqad kazzabal lazeena min qablihim fakaifa kaana nakeer.
(19)Awalam yaraw ilat tairi fawqahum saaaffaatinw wa yaqbidn; maa yumsikuhunna il’lar rahmaan; innahoo bikulli shai in baseer.
(20)Amman haazal lazee huwa jundul lakum yansurukum min doonir rahmaan; inilkaafiroona illaa fee ghuroor.
(21)Amman haazal lazee yarzuqukum in amsaka rizqah; bal lajjoo fee ‘utuwwinw wa nufoor.
(22)Afamai yamshee mukibban ‘alaa wajhihee ahdaaa ammany yamshee sawiyyan ‘alaa siratim mustaqeem.
(23)Qul huwal lazee ansha akum wa ja’ala lakumus sam’a wal absaara wal af’idata qaleelam maa tashkuroon.
(24)Qul huwal lazee zara akum fil ardi wa ilaihi tuhsharoon.
(25)Wa yaqooloona mataa haazal wa’du in kuntum saadiqeen.
(26)Qul innamal ‘ilmu ‘indallaahi wa innamaaa ana nazeerum mubeen.
(27)Falaammaa ra-awhu zulfatan seee’at wujoohul lazeena kafaroo wa qeela haazal lazee kuntum bihee tadda’oon.
(28)Qul ara’aytum in ahlaka niyal laahu wa mam ma’iya aw rahimanaa famai-yujeerul kaafireena min ‘azaabin aleem.
(29)Qul huwar rahmaanu aamannaa bihee wa ‘alaihi tawakkalnaa fasata’lamoona man huwa fee dalaalim mubeen.
(30)Qul ara’aytum in asbaha maaa’ukum ghawran famai ya’teekum bimaaa’im ma’een.
সুরা মুলক ইংরেজি অনুবাদ (Surah Mulk English Translation)
In the name of Allah, Most Gracious, Most Merciful.
Blessed be He in Whose hands is Dominion; and He over all things hath Power; He Who created Death and Life, that He may try which of you is best in deed: and He is the Exalted in Might, Oft-Forgiving; He Who created the seven heavens one above another: No want of proportion wilt thou see in the Creation of (Allah) Most Gracious. So turn thy vision again: seest thou any flaw?
Again turn thy vision a second time: (thy) vision will come back to thee dull and discomfited, in a state worn out. And we have, (from of old), adorned the lowest heaven with Lamps, and We have made such (Lamps) (as) missiles to drive away the Evil Ones, and have prepared for them the Penalty of the Blazing Fire. For those who reject their Lord (and Cherisher) is the Penalty of Hell: and evil is (such), Destination. When they are cast therein, they will hear the (terrible) drawing in of its breath even as it blazes forth. Almost bursting with fury: Every time a Group is cast therein, its Keepers will ask, “Did no Warner come to you?”
They will say: “Yes indeed; a Warner did come to us, but we rejected him and said, ´Allah never sent down any (Message): you are nothing but an egregious delusion!’” They will further say: “Had we listened or used our intelligence, we should not (now) be among the Companions of the Blazing Fire!” They will then confess their sins: but far will be (Forgiveness) from the Companions of the Blazing Fire! As for those who fear their Lord unseen, for them is Forgiveness and a great Reward. And whether you hide your word or publish it, He certainly has (full) knowledge of the secrets of (all) hearts. Should He not know,- He that created? and He is the One that understands the finest mysteries (and) is well-acquainted (with them). It is He Who has made the earth manageable for you, so traverse you through its tracts and enjoy the Sustenance which He furnishes: but unto Him is the Resurrection.
Do you feel secure that He Who is in heaven will not cause you to be swallowed up by the earth when it shakes (as in an earthquake)? Or do you feel secure that He Who is in Heaven will not send against you a violent tornado (with showers of stones), so that you shall know how (terrible) was My warning? But indeed men before them rejected (My warning): then how (terrible) was My rejection (of them)? Do they not observe the birds above them, spreading their wings and folding them in? None can uphold them except (Allah) Most Gracious: Truly (Allah) Most Gracious: Truly it is He that watches over all things. Nay, who is there that can help you, (even as) an army, besides (Allah) Most Merciful? In nothing but delusion are the Unbelievers. Or who is there that can provide you with Sustenance if He were to withhold His provision? Nay, they obstinately persist in insolent impiety and flight (from the Truth).
Is then one who walks headlong, with his face grovelling, better guided,- or one who walks evenly on a Straight Way? Say: “It is He Who has created you (and made you grow), and made for you the faculties of hearing, seeing, feeling and understanding: little thanks it is you give. Say: “It is He Who has multiplied you through the earth, and to Him shall you be gathered together.” They ask: When will this promise be (fulfilled)? – If you are telling the truth. Say: “As to the knowledge of the time, it is with Allah alone: I am (sent) only to warn plainly in public.” At length, when they see it close at hand, grieved will be the faces of the Unbelievers, and it will be said (to them): “This is (the promise fulfilled), which you were calling for!”
Say: “See you?- If Allah were to destroy me, and those with me, or if He bestows His Mercy on us,- yet who can deliver the Unbelievers from a grievous Penalty?” Say: “He is (Allah) Most Gracious: We have believed in Him, and on Him have we put our trust: So, soon will you know which (of us) it is that is in manifest error.” Say: See you?- If your stream be some morning lost (in the underground earth), who then can supply you with clear-flowing water?
Surah Mulk PDF/ সুরা মূলক পিডিএফ
সূরা মূলক আরবি বাংলা ও ইংরেজিতে একসাথে পড়ুন এই পিডিএফ এ
সূরা মূলক অডিও :
সূরা মূলক এর শানে নুযূল (Surah Mulk)
পবিত্র নগরী মক্কায় অবর্তীণ সূরা আল-মুলক কুরআনুল কারিমের ৬৭তম সূরা। এর আয়াত সংখ্যা ৩০। রুকু ২। কুরআন তেলাওয়াত আমলকারীদের জন্য সূরাটি অনেক ফজিলতপূর্ণ। সূরা আল-মুলক তার তেলাওয়াতকারীকে ক্ষমা করে দেয়ার আগ পর্যন্ত সুপারিশ করত থাকে।
এ সূরাটিতে একদিকে ইসলামী শিক্ষার মূল বিষয়সমূহ তুলে ধরা হয়েছে। অন্যদিকে যেসব লোক বেপরোয়া ও অমনোযোগী ছিল তাদেরকে অত্যন্ত কার্যকরভাবে সজাগ করে দেয়া হয়েছে। মক্কী জীবনের প্রথম দিকে নাযিল হওয়া সূরাসমূহের বৈশিষ্ট হলো, তাতে ইসলামের গোটা শিক্ষা ও রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নবী করে পাঠানোর উদ্দেশ্য সবিস্তারে নয় বরং সংক্ষেপ্তভাবে বর্ণন করা হয়েছে। ফলে তা ক্রমান্বয়ে মানুষের চিন্তা-ভাবনায় বদ্ধমূল হয়েছে। সেই সাথে মানুষের বেপরোয়া মনোভাব ও অমনোযোগিতা দূর করা, তাকে ভেবে চিন্তে দেখতে বাধ্য করা এবং তার ঘুমন্ত বিবেককে জাগিয়ে তোলার প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।
প্রথম পাঁচটি আয়াতে মানুষের এ অনুভূতিকে জাগানোর চেষ্টা করা হয়েছে যে, যে বিশ্বলোকে সে বাস করছে তা এক চমৎকার সুশৃংখ ও সুদৃঢ় সাম্রাজ্য। হাজারো তালাশ করেও সেখানে কোন রকম দোষ-ত্রুটি , অসম্পূর্ণতা, কিংবা বিশৃংখলার সন্ধান পাওয়া যাবে না। এক সময় এ সাম্রাজ্যের কোন অস্তিত্ব ছিল না। মহান আল্লাহই একে অস্তিত্ব দান করেছেন , এর পরিচালনা, ব্যবস্থাপনা ও শাসনকার্যের সমস্ত ইখতিয়ার নিরংকুশভঅবে তারই হাতে। তিনি অসীম কুদরতের অধিকারী। এর সাথে মানুষের একথাও বলে দেয়া হয়েছে যে, এ পরম জ্ঞানগর্ভ ও যুক্তিসংগত ব্যবস্থাসঙ্গত ব্যবস্থার মধ্যে তাকে উদ্দেশ্যহীনভাবে সৃষ্টি করা হয়নি। বরং এখানে তাকে পরীক্ষা করার জন্য পাঠানো হয়েছে। তার শুধু সৎকর্ম দ্বারাই সে এ পরীক্ষায় সফলতা লাভ করতে সক্ষম।
আখেরাতে কুফরীর যে ভয়াবহ পরিণাম দেখা দেবে ৬ থেকে ১১ নং আয়াতে তা বর্ণনা করা হয়েছে। এখানে মানুষকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে যে, মহান আল্লাহ তাঁর নবীদের পাঠিয়ে এ দুনিয়াতেই সে ভয়াবহ পরিণাম সম্পর্কে সামাধান করে দিয়েছেন। এখন তোমরা যদি এ পৃথিবীতে নবীদের কথা মনে নিয়ে নিজেদের আচরণ ও চাল-চলন সংশোধন না করো তাহলে আখেরাতে তোমরা নিজেরাই একথা স্বীকার করতে বাধ্য হবে যে, তোমাদের যে শাস্তি দেয়া হচ্ছে প্রকৃতপক্ষে তোমরা তার উপযোগী।
১২থেকে ১৪ নং আয়াতে এ পরম সত্যটি বুঝানো হয়েছে যে, স্রষ্টা তাঁর সৃষ্টি সম্পর্কে বেখবর থাকতে পারেন না। তিনি তোমাদের গোপন ও প্রকাশ্য প্রত্যেকটি কাজ ও কথা এমনকি তোমাদের মনের কল্পনাসমূহ পর্যন্ত অবগত। তাই নৈতিকতার সঠিক ভিত্তি হলো, মন্দ কাজের জন্য দুনিয়াতে পাকড়াও করার মত কোন শক্তি থাক বা না থাক এবং ঐ কাজ দ্বারা দুনিয়াতে কোন ক্ষতি হোক বা না হোক , মানুষ সবসময় অদৃশ্য আল্লাহর সামনে জবাবদিহির ভয়ে সব রকম মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকবে। যারা এ কর্মপদ্ধতি গ্রহণ করবে আখেরাতে তারাই বিরাট পুরস্কার ও ক্ষমালাভের যোগ্য বলে গণ্য হবে।
১৫ থেকে ২৩ নং আয়াতে পরপর কিছু অবহেলিত সত্যের প্রতি ইংগিত দিয়ে সে সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করার আহবান জানানো হয়েছে। এগুলোকে মানুষ দুনিয়ায় নিত্য নৈমিত্তিক সাধারণ ব্যাপার মনে করে সন্ধানী দৃষ্টি মেলে দেখে না। বলা হয়েছে, এ মাটির প্রতি লক্ষ্য করে দেখো। এর ওপর তোমরা নিশ্চিন্তে আরামে চলাফেরা করছো এবং তা থেকে নিজেদের প্রয়োজনীয় রিযিক সংগ্রহ করছো। আল্লাহ তা’আলাই এ যমীনকে তোমাদের আনুগত করে দিয়েছেন। তা না হলে যে কোন সময় এ যমীনের ওপর ভূমিকম্প সংঘটিত হয়ে তা তোমাদেরকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে পারে। কিংবা এমন ঝড়- ঝাঞ্চা আসতে পারে যা তোমাদের সবকিছু লণ্ডভণ্ড করে দেবে। মাথার ওপরে উড়ন্ত পাখীগুলোর প্রতি লক্ষ করো। আল্লাহই তো ওগুলোকে শূন্যে ধরে রাখেন।
২৪ থেকে ২৭ নং আয়াতে বলা হয়েছে যে, অবশেষে একদিন তোমাদেরকে নিশ্চিতভাবে আল্লাহর সামনে হাজির হতে হবে। নবীর কাজ এ নয় যে, তিনি তোমাদেরকে সেদিনটির আগমনের সময় ও তারিখ বলে দেবেন। তার কাজ তো শুধু এতটুকু যে, সেদিনটির আসার আগেই তিনি তোমাদের সাবধান করে দেবেন। আজ তোমরা তার কথা মানছো ন। বরং ঐ দিনটি তোমাদের সামনে হাজির করে দেখিয়ে দেয়ার দাবী করছো। কিন্তু যখন তা এসে যাবে এবং তোমরা তা চোখের সামনে হাজির দেখতে পাবে তখন তোমরা সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলবে।
২৮ থেকে ২৯ নং আয়াতে মক্কার কাফেরদের কিছু কথার জবাব দেয়া হয়েছে। এসব কথা তারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর সংগী-সাথীদের বিরুদ্ধে বলতো। তারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অভিশাপ দিতো এবং তাঁর ও ঈমানদারদের ধ্বংস হয়ে যাওয়ার জন্য বদ দোয়া করতো। তাই বলা হয়েছে যে, তোমাদেরকে সৎপথের দিকে আহবানকারীরা ধ্বংস হয়ে যাক বা আল্লাহ তাদের প্রতি রহম করুক তাতে তোমাদের ভাগ্যের পরিবর্তন কি করে হবে? তোমরা নিজের জন্য চিন্তা করো। আল্লাহর আযাব যদি তোমাদের ওপর এসে পড়ে তাহলে কে তোমাদেরকে রক্ষা করবে? যারা আল্লাহর ওপর ঈমান এনেছে এবং যাঁরা তাঁর ওপরে তাওয়াক্কুল করেছে তোমরা মনে করছো তারা গোমরাহ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এমন এক সময় আসবে যখন প্রকৃত গোমরাহ কারা তা প্রকাশ হয়ে পড়বে।
অবশেষে মানুষের সমানে একটি প্রশ্ন রাখা হয়েছে এবং সে সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করে দেখতে বলা হয়েছেঃ মরুভূমি ও পবর্তময় আরবভূমিতে যেখানে তোমাদের জীবন পুরোটাই পানির ওপর নির্ভরশীল, পানির এসব ঝরণা ভূগর্ভ থেকে বেরিয়ে এসেছে। এসব জায়গায় পানির উৎসগুলো যদি ভুগর্ভের আরো নীচে নেমে উধাও হয়ে যায় তাহলে আর কোন শক্তি আছে, যে এই সঞ্জীবনী-ধারা তোমাদের কাছে ফিরিয়ে দিতে পারে।
এছাড়াও ইসলামিক প্রশিক্ষণ সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন।
আরও পড়ুনঃ সূরা ইয়াসিন : বাংলা উচ্চারণ, অর্থ, অডিও ও ফযিলত
সূরা মুলক এর ফজিলত
প্রতিদিন (রাতে যেকোনো এক সময়) সূরা মুলক তেলাওয়াত করা মর্তবাপূর্ণ একটি সুন্নতঃ
“রাসুলুল্লাহ (সাঃ), আলিফ লাম মীম তানজিলুল কিতাব (সূরা আস-সাজদা) ও তাবারাকাল্লাযী বিয়াদিহিল মুলকু (সূরা মুলক) তেলাওয়াত না করে কোনদিন ঘুমাতেন না”।
সুনানে আত-তিরমিযী ২৮৯২, মুসনাদে আহমাদ ১৪২৯। শায়খ আলবানীর মতে হাদীসটি সহীহ, সহীহ তিরমিযী ৩/৬।
যে ব্যক্তি সূরা আল-মূলক নিয়মিত প্রতিদিন তেলাওয়াত করলে কবরের আজাব থেকে সুরক্ষা পাবে।
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেছেনঃ
“যে ব্যক্তি প্রতিদিন রাতের বেলা তাবারাকাল্লাযী বিয়াদিহিল মুলক (সূরা মুলক) তেলাওয়াত করবে আল্লাহ তাকে কবরের আজাব থেকে রক্ষা করবেন। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর যামানায় এই সূরাটিকে আমরা “আল-মা’আনিয়াহ” বা সুরক্ষাকারী বলতাম। যে রাতের বেলা এই সূরাটি পড়বে সে খুব ভালো একটা কাজ করলো”।
সুনানে আন-নাসায়ী ৬/১৭৯। শায়খ আলবানীর মতে হাদীসটি হাসান সহীহ, সহীহ আত-তারগীব ওয়াল তারহীব ১৪৭৫।
এই সূরা প্রত্যেকদিন রাতের বেলা পাঠ করলে কিয়ামতের দিন শাফায়াত করে জান্নাতে নিয়ে যাবে ইন শা’ আল্লাহঃ
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
“কুরআনে এমন একটা সূরাআছে যার মধ্যে ৩০টা আয়াত রয়েছে যেটা একজন ব্যক্তির জন্য সুপারিশ করবে এবং তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে। আর সেটা হলো তাবারাকাল্লাযী বিয়াদিহিল মুলকু (সূরা মুলক)”।
সুনানে আত-তিরমিযী ২৮৯১, সুনানে আবু দাউদ ১৪০০, মুসনাদের আহমাদ, ইবনে মাজাহ ৩৭৮৬।
ইমাম তিরমিযী বলেছেন হাদীসটি হাসান, ইবনে তাইমিয়্যা বলেছেন সহীহ মাজমু ২২/২২৭, শায়খ আলবানীর মতে হাদীসটি সহীহ, সহীহ তিরমিযী ৩/৬, সহীহ ইবনে মাজাহ ৩০৫৩।
হাশরের ময়দানে স্বয়ং কুরআন যখন আপনার বন্ধু হয়ে আপনার সুপারিশ করবে এর চাইতে বর পাওয়া আর কি হতে পারে।
আরো জানতে পড়ুন সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত : বাংলা উচ্চারণ, অর্থ, আরবি অডিও, ফজিলত
সূরা মুলক তেলাওয়াতের সময়
সূরা মুলক রাতের বেলা পড়া উত্তম, তবে অন্য যেকোনো সময়ও পড়া যাবে। সূরাটি অর্থ বুঝে নিয়মিত পড়ায় রয়েছে অনন্য তাৎপর্য। এই সূরা নামাজের সঙ্গে পড়াও উত্তম। মুখস্ত না থাকলে দেখে দেখে অর্থ বুঝে পড়লে বিশেষ সাওয়াব পাওয়া যায়। হাদিসে এসেছে-
- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সূরা মুলক তেলাওয়াত না করে রাতে ঘুমাতে যেতেন না।’ (তিরমিজি) - হজরত জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আলিফ লাম মীম তানযিল ও তাবারাকাল্লাজি না পড়ে কখনো ঘুমাতে যেতেন না।’ - সূরা মূলক ৪১ বার (একচল্লিশ) পাঠ করলে সব বিপদ-আপদ হতে রক্ষা পাওয়া যায় এবং ঋণ পরিশোধ হয়। এ সূরা পাঠে কবরের আজাব থেকেও বাঁচা যায়।
উল্লেখ্য যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সূরা মুলক না পড়ে ঘুমাতে যেতেন না মর্মে বর্ণনার উপর ভিত্তি করেই আলেম-ওলামা ও বুজুর্গানে দ্বীনগণ ইশার নামাজের পর সূরা মুলকের তেলাওয়াতের আমল করার কথা বলেন। সুতরাং রাতে ঘুমানোর আগে কিংবা ইশার নামাজের পরে বুঝে বুঝে সূরা মূলক (surah mulk) বাংলা অনুবাদ উচ্চারণ অর্থ আরবি অডিও ফযিলত এবং শানে নুযূল পড়া যেতে পারে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সূরা মুলকের আমল নিয়মিত করার তাওফিক দান করুন। মুহাম্মদ (সাঃ) এর সুন্নাহ মোতাবেক জীবন পরিচালনা করি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে হাদিসে ঘোষিত ফজিলত লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।