ত্বকে ব্রণের সমস্যা যেকোনো বয়সের মানুষের হতে পারে। তবে এই সমস্যার জন্য প্রথমেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে হাজার হাজার টাকা খরচ করার আগে ত্বকে লাগিয়ে দেখতে পারেন কিছু প্রাকৃতিক উপাদান। প্রকৃতি থেকে পাওয়া এই উপাদানগুলো যাদুর মতো কাজ করবে আপনার ত্বকে।
কীভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে আপনার ত্বকের ব্রণ দূর করবেন তার-ই বিস্তারিত বর্ণনা এই আর্টিকেলটিতে প্রদান করা হয়েছে।
এই আর্টিকেল পড়ে যা যা জানতে পারবেনঃ 👉 ব্রণ কি? 👉 ব্রণ হওয়ার কারণ 👉 ব্রণের প্রকারভেদ 👉 প্রাকৃতিক উপায়ে কেন ব্রণ দূর করবেন? 👉 ১০টি প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায় 👉 ব্রণ থাকা অবস্থায় কি করবেন? 👉 চিকিৎসকের কাছে কখন যাবেন?
নিজের চেহারা কার না প্রিয়। আর এই প্রিয় চেহারায় সামান্যতম মশার কামড়ের দাগও অসহ্যকর হয়ে ঠেকে। তাহলে ব্রণের মত দীর্ঘমেয়াদি সমস্যাগুলো সাধারণ মানুষকে কতটা বুক ফাটা হাহাকার প্রদান করতে পারে সেটা হয়তো আর বলার বাকি রাখে না।
কার কখন কোথায় ব্রণ ওঠে এবং কত সময় পর্যন্ত ভোগায় তা ঠিক বলা মুশকিল। এছাড়াও অনেক সাবধানতা অবলম্বন করার পরেও দেখা যায় ব্রণকে কোনমতে ঠেকানো যায় না।
কিন্তু তাই বলে ব্রণের সমস্যাকে দূর করার জন্য পিছিয়ে নেই কেউ-ই। চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া থেকে শুরু করে নামিদামি ব্র্যান্ডেড ক্রিম ব্যবহার করা কোন কিছুই বাদ যাচ্ছে না।
তবে অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, আপনার আশেপাশেই বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে চিরতরে ব্রণকে তাড়িয়ে দিতে পারবেন যেখানে হাজার হাজার টাকা খরচও করতে হবে না।
কীভাবে? জানতে হলে আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
ব্রণ দূর করার উপায় জানতে হলে প্রথমে জেনে নিতে হবে ব্রণ আসলে কী। চলুন তা জেনে নেওয়া যাক।
ব্রণ কী?
ব্রণ হচ্ছে মূলত শরীরের একটি দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা। যেটা কি-না যেকোন বয়সের যে কোন লিঙ্গের মানুষের যখন তখন হতে পারে। তবে বয়সন্ধির সময়টায় ছেলেমেয়েদের অধিক হারে ব্রণের সমস্যা দেখা যায়। যার প্রকোপ ২০ বছর বয়সের পর ধীরে ধীরে কমে আসে।
আমাদের সম্পূর্ণ শরীর ত্বক দ্বারা আবৃত। আর এই ত্বকের নিচে অসংখ্য গ্রন্থি রয়েছে।
তন্মধ্যে বয়ঃসন্ধির সময়টায় ছেলে-মেয়ে উভয়ের টেস্টোস্টেরন ও প্রজেস্টেরন হরমোনের প্রভাবে ফিবেসিয়াস গ্রন্থি তৈলাক্ত উপাদান নিঃসরণ করে। কোনো কারণে সেই তেল নিঃসরণ করার গ্রন্থির মুখ বন্ধ হয়ে গেলে তা বের হতে পারে না।
ফলে সেবাম নিঃসরণ বাধাপ্রাপ্ত হয়৷ আর এই সেবাম-ই ত্বকের নিচে জমতে জমতে একটা সময় গিয়ে ফুলে উঠে। অতিরিক্ত ফুলে গেলে গ্রন্থি ফেটে যায়। আর তেল আশেপাশের টিস্যুতে ছড়িয়ে পড়ে৷
অতঃপর ব্যাকটেরিয়া এসে সেই তেলকে ভেঙে দিয়ে টিস্যুতে ফ্যাটি এসিড উৎপন্ন করে। এই এসিড দ্বারা-ই মুখের যে প্রদাহ বা দানাদার অংশটা সৃষ্টি হয় তা-ই “ব্রণ”।
ব্রণ দূর করার উপায়
১০টি প্রাকৃতিক উপাদান যা ব্যবহার করলে ব্রণ থেকে চিরতরে মুক্তি পাবেন
ব্রণ দূর করার প্রাকৃতিক কিছু সমাধান আপনার হাতের কাছেই রয়েছে। সুতরাং দেরী না করে এখনই ব্রণ চিরতরে তাড়িয়ে দেওয়ার যুদ্ধের মাঠে নেমে পড়ুন।
(১) লেবুর রস
লেবুর রসে রয়েছে সাইট্রিক অ্যাসিড। যা ব্রণকে ধ্বংস করতে সক্ষম। এজন্য আপনাকে প্রথমে একটি পাতিলেবু ভালোমতো চিপে রস বের করতে হবে। সেই রসে তুলো ভিজিয়ে ভালোমতো ত্বকের যে সকল স্থানে ব্রণ রয়েছে তাতে লাগান।
তবে ত্বক সংবেদনশীল হলে লেবুর রসে অল্প গোলাপ জল বা ভিটামিন-ই ক্যাপসুল মিশিয়ে নিতে পারেন।
এছাড়াও লেবুর রসের সাথে দারুচিনি গুড়ো ভালোভাবে মিশিয়ে তা রাতে ঘুমানোর পূর্বে ব্রণে লাগাতে পারেন। পরের দিন সকালে উষ্ণ গরম পানি দিয়ে ত্বক ভালোভাবে ধুয়ে ফেলবেন। ভালো ফলাফল পেতে উভয় পদ্ধতি সপ্তাহে ৪/৫ বার ব্যবহার করুন।
(২) মুলতানি মাটি
মুলতানি মাটি অসম্ভব গুনাগুন সম্পন্ন। এতে আছে অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ করার শক্তি। আপনার ত্বক থেকে তেল যত কম নিঃসরণ হবে ততো ব্রণের ঝামেলা থেকে রেহাই পাবেন।
এক চামচ মুলতানি মাটিতে পরিমাণ মতো জল দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। উক্ত পেস্ট ত্বক পরিষ্কার করে ভালোভাবে লাগান এবং কিছুক্ষণ পর তা ধুয়ে ফেলুন। কয়েকদিন ব্যবহার করতে থাকলে ফলাফল দ্রুত চোখে পড়বে।
মুলতানি মাটি কোথায় পাওয়া যাবে এবং এর দাম কেমন?
রুপ চর্চার উপাদান হওয়ায় যেকোনো দোকানে বা লেডিস পার্লারে মুলতানি মাটি পেয়ে যেতে পারেন৷ একেক জায়গায় এই মাটির দাম একেক রকম হয়। তবে ৪০-১২০টাকার মধ্যে এই মাটির মূল্য হয়ে থাকে।
(৩) গ্রিন টি
গরম পানি দিয়ে গ্রিন টি তৈরি করুন। এই গ্রিন টি একেবারে যখন ঠান্ডা হয়ে যাবে তখন তা তুলো দিয়ে ভিজিয়ে ব্রণে ভালোভাবে লাগান। এতেও ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।
গ্রিন টি তে থাকা উপাদান আপনাকে ব্রণ থেকে রক্ষা পেতে সহায়তা করবে
(৪) রসুন
অনেকেই রসুনের জাদুকরী কার্য সম্পর্কে অবগত নন। সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, রসুনের ভেতর এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা ব্রণের চিরশত্রু।
১/২ কোয়া রসুনকে যদি আপনি দুই টুকরা করে কেটে রস বের করে আপনার ব্রণে ভালোভাবে লাগিয়ে ৫ মিনিট রেখে দেন। তবে ফলাফল নিজের চোখে দেখতে পারবেন। সবথেকে ভালো হয় যদি রসুনের রস রাতে ঘুমানোর পূর্বে ব্রণে লাগিয়ে সকাল বেলা উষ্ণ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলা।
(৫) শসা
শসা ত্বকের জন্য কতটা উপকারী সেটা আলাদা করে বলে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। এই শসাতে রয়েছে ভিটামিন এ’ এবং ই। যা মুখের যেকোনো সমস্যার জন্য বেশ কার্যকর।
ব্রণ দূর করতে প্রথমে শসা থেঁতে ভালো করে ত্বকে লাগাতে হবে। অতঃপর ২০ মিনিট রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
এছাড়াও শসাকে গোল গোল করে কেটে কমপক্ষে 1 ঘন্টা পানিতে রেখে দিতে পারেন। অতঃপর সেই পানি দিয়ে মুখ ধুলে বা পান করলেও ব্রণ থেকে পরিত্রাণ পাবেন।
বাইরে থেকে এসে শসা দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করতে পারলে অনেক বেশি ভালো হয়। এক্ষেত্রে একবারে শসার আইস কিউব করে রাখা সুবিধাজনক।
(৬) চন্দন গুড়ো
চন্দন কাঠের গুঁড়ো ত্বকের বিভিন্ন রকমের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে সক্ষম।
চন্দন কাঠের গুড়ার সাথে সমপরিমাণ কাঁচা হলুদ মিশিয়ে তাতে পানি দিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। অতঃপর সেই পেস্টকে ত্বকের ব্রণে লাগান। শুকিয়ে গেলে মুখ ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই পদ্ধতি শুধুমাত্র ব্রণ দূর করে না বরং ব্রণের ফেলে যাওয়া দাগও দূর করতে সহায়তা করে।
এছাড়াও চন্দন গুঁড়োর আরো একটি ব্যবহার রয়েছে। সেটা হচ্ছে নিমপাতা বেটে চন্দনের গুঁড়োর সাথে ভালোভাবে মাখিয়ে ত্বকে লাগান। অতঃপর ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ৩/৪ দিন করতে পারলেই ভালো ফলাফল আশা করতে পারেন।
চন্দন কাঠের গুড়ো কোথায় পাবেন এবং কেমন দাম?
বিভিন্ন কসমেটিকসের দোকানেই চন্দন কাঠের গুড়ো পাওয়া যায়। এর দাম পয়ত্রিশ থেকে একশ টাকার ভেতর হয়ে থাকে।
(৭) ডিমের সাদা অংশ
চুলের জন্য যেরকম ডিমের সাদা অংশ উপকারী ঠিক একই ভাবে ত্বকেও ডিমের সাদা অংশের ভূমিকা অনিবার্য। যার কারণে ব্রণ থেকে রক্ষা পেতে হলে আপনি আপনার ত্বকে ডিমের সাদা অংশের ব্যবহার করতে পারেন।
রাতে ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে ডিমের সাদা অংশকে ত্বকে লাগিয়ে মাসাজ করে পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে মুখ ধুয়ে ফেললে ভালো ফলাফল পাবেন।
তবে দ্রুত ফলাফল পাওয়ার জন্য ডিমের সাদা অংশের সাথে লেবুর রস ভালোভাবে মিশিয়ে ত্বকে লাগানোর আধা ঘন্টা পর ধুয়ে ফেললেও হবে।
(৮) আপেল ও মধুর মিশ্রণ
একটা আপেলকে ভালো করে কেটে ব্লেন্ডারে দিয়ে পেস্ট করে নিন। অতঃপর তাতে চার থেকে ছয় ফোঁটা মধু যোগ করুন। ভালোভাবে মিশ্রনটিকে ত্বকে লাগিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
সপ্তাহে পাঁচ থেকে ছয় বার এই প্যাকটি ব্যবহার করলে আশা করা যায় খুব দ্রুত ব্রণ থেকে পরিত্রান পাবেন।
(৯) তুলসীর রস
তুলসী একটি ভেষজ গুণাগুণ সম্পন্ন আয়ুর্বেদ উদ্ভিদ। কত রকম সমস্যার সমাধান যে এর রসে সৃষ্টিকর্তা দিয়ে দিয়েছেন তা বলার বাইরে।
শুধুমাত্র তুলসী পাতা বেটে এর রস বের করে ব্রণে লাগাতে পারেন। শুকিয়ে গেলে কুসুম গরম পানি দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করে ফেলুন। পরপর কয়েক দিন এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে থাকলে খুব দ্রুত ব্রণ থেকে পরিত্রান পাবেন বলে আশা করা যায়।
(১০) অ্যালোভেরার নির্যাস
তুলসীর পরে অন্য কোন ভেষজ উদ্ভিদ যদি আমাদের শরীর ভালো লাগতে ভূমিকা পালন করে তবে সেটা হচ্ছে অ্যালোভেরা। অ্যালোভেরা ত্বকের জন্য অনেক ভালো।
সুতরাং ত্বকে ব্রণ দেখা গেলে অ্যালোভেরার পাতা থেকে নির্যাস বের করে দিনে দুইবার ৩০ মিনিট করে লাগিয়ে রাখলেই হবে। এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। তাছাড়া প্রতিনিয়ত অ্যলোভেরার নির্জাস ত্বকে ব্যবহার করার ফলে ত্বক হয়ে উঠবে পূর্বের থেকেও অনেক উজ্জ্বল।
যেকোনো সুপারমার্কেটেই এলোভেরা পাওয়া যায়, তাও স্বল্প মূল্যে।
যে সকল কারণে ত্বকে ব্রণ হতে পারে:
ত্বকে বিভিন্ন কারণে ব্রণ হতে পারে। তবে সবচেয়ে বেশি ব্রণ হয় মূলত নিম্নোক্ত কারণে-
১. বয়ঃসন্ধিকালে অধিক হরমোন নিঃসরণ ২. বংশগত কারণে তথা পূর্ব পুরুষের কারও এই সমস্যা থাকলে ৩. অতিরিক্ত মদ্যপান করলে ৪. মাথায় খুশকি থাকলে ৫. ত্বক অপরিষ্কার রাখলে বা জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হলে ৬. তৈলাক্ত খাবার বেশি খাওয়া বা হজমে গোলমাল হলে ৭. অতিরিক্ত ঘাম হলে ৮. কোনো কারণে খুব দুশ্চিন্তা করা বা মানসিক চাপে থাকলে ৯. কম ঘুম বা রাত জাগা কিংবা পরিমিত ঘুম না হলে ১০. ত্বকে প্রসাধনীর সঠিক ব্যবহার না করলে বা মাত্রাতিরিক্ত ক্যামিকেল অথবা নকল পণ্য ব্যবহার করলে।
এই সকল সাধারণ কারণগুলো ছাড়াও আরও অনেক কারণে ত্বকে ব্রণ উঠতে পারে। এই ব্রণ যদি আবার সংক্রমিত হয় তখন এতে পুঁজ তৈরি হয়।
সত্যিকার অর্থে ব্রণের গভীরতা কখনো আন্দাজ করা যায় না। চেহারার আবরণের উপর মসুর ডালের দানার মতো দেখতে ব্রণের গভীরতাও ত্বকের নিচে যে কত বেশি সেটা বোঝার উপায় নেই। ব্রণ যত গভীর, ততো ত্বকে দীর্ঘমেয়াদি দাগ পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ব্রণের প্রকারভেদগুলো যেমন হয়ে থাকে-
বিভিন্ন কারণে ত্বকে ব্রণ উঠতে পারে। তাই ক্ষেত্রবিশেষে ব্রণের প্রকারভেদগুলোও ভিন্ন রকম। যেমন:
⇒ একনি কসমেটিকা
এই ধরনের ব্রণগুলো হয় প্রসাধনী ব্যবহার থেকে। ত্বকে অতিরিক্ত প্রসাধনীর ব্যবহার করা কিংবা নকল প্রসাধনী ব্যবহার করার কারণে এ ধরনের ব্রণ উঠে।
যদি কখনো মেকআপ ব্যবহার করে রাতে বাড়ি ফিরে সেটা পরিষ্কার না করে ঘুমিয়ে যান তবে তা থেকে একনি কসমেটিকা ব্রণ হওয়ার আশংকা ১০০%।
⇒ স্টেরয়েড একনি
দীর্ঘদিন ধরে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ সেবন করার কারণে ত্বকে এই ব্রণ দেখা দিতে পারে।
⇒ প্রিমিনস্ট্রুয়াল একনি
এই ব্রণ গুলো সাধারণত প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েদের মাসিকের সপ্তাহ খানেক আগে হয় এবং কিছুদিন স্থায়ী হয়ে চলে যায়।
⇒ ট্রপিক্যাল একনি
অতিরিক্ত গরমের কারনেও পিঠে কিংবা উরুতে ব্রণ উঠে যেটাকে ট্রপিক্যাল একনি বলে।
⇒ ডিটারজিনেক্স একনি
সাধারণত মুখে অতিরিক্ত সাবান বা এজাতীয় ক্ষার দিয়ে পরিষ্কার করলে ত্বকে ডিটারজিনেক্স ব্রণ ওঠে।
কেন প্রাকৃতিক উপায়ে ব্রণ দূর করবেন?
বর্তমানে ব্রণ দূর করার জন্য নানা রকমের এলোপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতির পাশাপাশি বিভিন্ন রকমের উন্নত নামিদামি ক্রিমের আবির্ভাব হয়েছে। যেগুলো খুব দ্রুততার সাথে আপনাকে ব্রণ থেকে পরিত্রান দিতে পারে।
⇒ তবে আপনি একটু চিন্তা করুন। চিকিৎসকেরা নিজেই বলে থাকেন অসুখ হলে খুব বেশি ঔষধ খেতে না, সে জায়গায় আপনি শুধুমাত্র ব্রণের কারণে এত এত ওষুধের শরণাপন্ন কেন হবেন? ⇒ এছাড়াও ব্রণের ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার একটা ব্যাপার থাকে। ⇒ আপনি ত্বকের ব্রণ দূর করার জন্য একটা ওষুধ সেবন করা ধরলেন। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা গেল ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে আপনার শরীরের অন্য রকম জটিলতা দেখা দিলো। ⇒ খুব বেশি জটিল অসুখে না ভুগলে ঔষুধ সেবন করা উচিত নয়। ⇒ এত এত ক্যামিকেল আমাদের শরীর নিতে পারে না। ⇒ তাছাড়া আমাদের শরীর প্রাকৃতিক ভাবে নিজে থেকেই সুস্থ হওয়ার ক্ষমতা রাখে, রাখে পরিস্থিতির সাথে খুব সহজেই খাপ খাইয়ে নেওয়ার শক্তি।
সুতরাং এই ক্ষুদ্র জিনিসের জন্য যেটার পরিত্রান পাবার উপায় স্বয়ং প্রকৃতি-ই আপনাকে দিচ্ছে। সেখানে আপনার কষ্ট করে টাকা খরচ করে ওষুধপত্র গ্রহণ করার প্রয়োজনীয়তাটা নেই। তা-ই কোনোকিছু করার পূর্বে একবার প্রকৃতিতেই চোখ বুলিয়ে দেখুন না।
আরও পড়ুনঃ ২০ টি উপায়ে চুল পড়া বন্ধ করুন চোখের নিমিষেই
ব্রণ থাকা অবস্থায় আপনি কী কী করতে পারেন?
অবশ্যই ব্রণ থাকা অবস্থায় আপনার মন মেজাজ খুব একটা ভালো থাকবে না। তবুও সব সময় চেষ্টা করতে হবে ব্রণকে প্রতিরোধ করার। ব্রণ হলে আপনার করনীয়-
১. অবশ্যই মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখতে হবে। কোনোভাবেই খুশকি হতে দেওয়া যাবে না। ২. বেশি বেশি প্রোটিন ভিটামিনযুক্ত খাবার খেতে হবে। ডেইরী প্রোডাক্ট যেকোনো হরমোনাল উপাদান বাড়িয়ে দেয় তাই ব্রণ হলে দুধ, দই, পনির ইত্যাদি এড়িয়ে চলাই উত্তম। মশলা ও তেল যুক্ত খাবার খাওয়া যাবে না। ৩. ত্বক পরিষ্কার রাখা। তেলতেলে ভাব দূর করার জন্য মানানসই ফেসওয়াশ ব্যবহার করা। ত্বকে তেল বাড়িয়ে দিতে পারে এমন ক্রিম বা মেকআপ ব্যবহার করা যাবে না। ৪. অন্যের তোয়ালে, চিরুনি ইত্যাদি ব্যবহার করা থেকে দূরে থাকুন ৫. পরিমিত ঘুমানোর চেষ্টা করুন মানসিক চাপ থেকে নিজেকে দূরে রাখুন। ৬. অতিরিক্ত রোদে বের হওয়া যাবে না। বের হলেও উন্নত মানের সানস্ক্রিম লাগিয়ে বের হতে হবে। ৭. ব্রণ হলে অবশ্যই নখ দিয়ে খোটানো যাবে না৷ কারণ এতে করে ব্রণ ডেবে যাবে। যেটার দাগ ভবিষ্যতে নাও উঠতে পারে। তাছাড়া নখে বিদ্যমান ময়লা ব্রণে লেগে গেলে তা সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যাবে।
কখন চিকিৎসকের কাছে হওয়া প্রয়োজন?
ব্রণ হলে ত্বকের বিভিন্ন জায়গা ফুলে যায় এবং ব্যথা করে। বিভিন্ন উপায়ে ব্রণ দূর করার পদ্ধতি অবলম্বন করা সত্ত্বেও যদি ব্রণ থেকে মুক্তি পেতে সক্ষম না হন। আর কোনভাবেই ব্যথা থেকে পরিত্রান পাওয়া যাচ্ছে না তখন অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
ব্রণ দূর করার উপায় নিয়ে একটা অথেন্টিক আর্টিকেলের লিংক দিয়েছি, পড়তে পারেন।
যারা ব্রণ নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ ভোগান্তি সহ্য করে যাচ্ছেন তারা অবশ্যই উপরোক্ত পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করে দেখবেন। তবে কোনো পদ্ধতি-ই কাজে না এলে সেক্ষেত্রে দ্রুত চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করুন। আজ ব্রণ দূর করার উপায় নিয়ে এ পর্যন্তই৷ ভালো থাকবেন।